কুরবানি
রফিক উদ্দিন লস্কর
ভোরের রবি আকাশে উঠে রূপ তার মলিন,
ঊষার ধরণী হলো আজ বেদনায় বিলীন।
আজ নীরব ধরা, তায় শুনি ইব্রাহিমের হাঁক
হাজেরা, ইসমাইলকে আজ সাজানো যাক্।
সাজিয়ে দাও ওকে, দেখুক বিশ্ব হয়ে হতবাক,
শত হাজার প্রশ্ন হাজেরার মনে তবুও নির্বাক।
কোথায় নেবেন নয়নের মনি ছেলেকে আমার
কি পয়গাম হয়েছে ফরমান! খোদাতায়ালার।
চাপিয়া মনের ব্যথা বেদনা ছেলেকে সাজায়,
বাঃ! পিতার পিছনে ছেলে আজ চলে নির্দ্বিধায়।
যাত্রাকালে বলেন পিতা, শুন হে পুত্র আমার,
জানো তুমি! আমার জন্য কি আহ্বান খোদার?
করে নত শির, পুত্র বলেন হে পিতা আমার,
বলুন তাহলে, আপনার তরে কি হুকুম এবার।
এবার বলেন পিতা ছেড়ে নিজ নয়নের পানি,
খোদা করেছেন যে আদেশ করতে কুরবানি।
সে যে নয়নের মনি বুকের ধন পুত্রকে আমার,
শুনে অশ্রুঝরে, আকাশ বাতাস ও তরু-লতার।
সব দেখছেন খোদা আরশে বসে এবার,
কি করবেন দোস্ত ইব্রাহিম, হুকুমে তাঁর।
সকল কথা শুনে ইসমাইল বলেন পিতা ওরে,
তবে কেন দেরী করো, কুরবানি করতে মোরে।
খোদার হুকুম করতে রদ আছে কি কারও সাধ্য!
পাষাণে বাঁধিয়া বুক ইব্রাহিম নবি হলেন বাধ্য।
নিজ পুত্রকে মাটিতে চেপে শোয়ালেন এবার,
বাছা উঠিল বলে, পিতা ছুরিটা করে নিও ধার।
হে পিতা! কাপড়ে বাধিও দু’চোখ আপনার,
ছুরি চালাবেন আপনি বলে ‘আল্লাহু আকবার।’
ইব্রাহিম নবি ছুরি চালালেন যবে পুত্রের গলে,
কি মাতাম শুরু হয় সৃষ্টির এই কুল মাখলুকে।
খোদার এমনি খেলা কেউ কি বুঝিতে পারে!
নয়ন মেলে দেখেন নবি, পুত্র হাসে দাঁড়িয়ে ধারে।
পিতার হুকুমে ইসমাইল হটে যাননি পিছে,
নবি দেখেন খোদার কুদরতি তাঁর ছুরির নীচে।
খোদা বলেন, ওহে প্রিয় বৎস ইব্রাহিম আমার,
আমি কবুল করেছি যে কুরবানি তোমার।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct