মঞ্জুর মোল্লা, নদিয়া, আপনজন: ১৬ বছর ধরে অসমাপ্ত জানালা দরজা উন্মুক্ত অবস্থায় থাকায় বিপদজনকভাবে বিদ্যালয়ে চলছে কচিকাঁচাদের পাঠ। আশঙ্কায় অনেকেই স্কু লে পাঠাচ্ছেন না বাচ্চাদের। নানাবিধ কারণে পড়াশোনা যেমন তেমন হোক না কেন, সাদা চকচকে বিদ্যালয় লক্ষ্য করা গেলেও জানালা দরজা নেই। তবে নদীয়ার শান্তিপুর ব্লকের, গয়েশপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত হিজুলি মুসলিম পাড়া এলাকায় তিতুমীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এতটুকু। ২০০৭ সালে দোতলা বিদ্যালয়ে তৈরির পর থেকে রং তো দূরের কথা ন্যূনতম পর্যন্ত হয়নি, এমন কি দরজা-জানলা পর্যন্ত অসমাপ্ত তাই সব সময় থাকে উন্মুক্ত। বিপজ্জনক ভাবেই প্রথম শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত কচিকাঁচাদের পঠন-পাঠন হয় দোতালায়, শিক্ষকদেরই যখন তখন ঘটে যেতে পারে বিপদ। মাত্র দুটি ফ্যানের পালা করে চলে ক্লাস। এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী আসর আলী শেখ বলেন, বিদ্যালয় লাগোয়া জলাভূমি।
বর্ষাকালে স্কুলের বারান্দা পর্যন্ত জল উঠে যায়, দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত হিসেবে পড়ে থাকার ফলে স্কুল ঘরের লোহারডে জং লেগেছে অনেক জায়গায়, যখন তখন ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় অভিভাবকরা অনেকেই তাদের বাচ্চাদের পড়াশোনা করতে পাঠায় না। দায়িত্বে থাকা প্রধান শিক্ষক তো বটেই অনেকবার এসআইকেও বলা সত্ত্বেও কোনো ফল মেলেনি। প্রাক্তন মেম্বার ফিরোজ শেখ বলেন, তার আমলেও চিঠি চাপাতি হয়েছে বহুবার, পাঁচ লক্ষ টাকা অনুদানের কথা শোনা গেলেও, পাঁচ টাকারও কাজ হয়নি পনেরো বছরে। এলাকাবাসী আশরাফুল শেখ বলেন, এই এলাকায় পিছিয়ে পড়া সংখ্যালঘুদের বাস, শিক্ষা দপ্তরের নানান উন্নয়নের কথা শোনা গেলেও, আমাদের গ্রামে পৌঁছায়নি কিছুই। ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবিকা সাহানি খাতুন, মনিলা বিবি রা জানান, যতক্ষন বাচ্চা স্কুলে থাকে ততক্ষণ দুশ্চিন্তা থাকে, তাই সংসারের কাজকর্ম ফেলে স্কুলের বারান্দায় প্রতীক্ষায় থাকতে হয়। সামনেই জলাভূমি কখন যে কি দুর্ঘটনা ঘটে যায়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসীম কুমার দাস, সমস্ত অভিযোগ মেনে নিয়েই বলেন, গ্রামবাসীদের সাথে তিনিও বেশ কয়েকবার চিঠি চাপাটি করেছেন এসআই অফিস ডিআই অফিস এবং বিডিও অফিসে, কেন যে তারা গুরুত্ব দিচ্ছেন না তা জানিনা,তবে গ্রামের মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে হয় আমাকে।শান্তিপুর সার্কেলের এস আই বিপ্লব বিশ্বাস বলেন, তিনি আসার পর বেশ কয়েকবার ঐ বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে, রিপোর্ট জমা দিয়েছি বিডিও অফিসে, প্রতি কয়েকদিন আগেও বিদ্যালয় মেরামতির আবেদনপত্রের পরিপ্রেক্ষিতে বিডিও বলেন অতি শীঘ্রই শুরু হবে কাজ। অভিভাবক এবং গ্রামের মানুষের প্রশ্ন এভাবেই হচ্ছে হবে করে কেটে গেছে পনেরাটা বছর।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct