আপনজন ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের জন্য ‘অর্থনৈতিক অবরোধ’ করছে। ছাত্রছাত্রীদের ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার সময় ঋণ দেওয়ার আগে অভিভাবকদের আয়ের শংসাপত্র চাওয়ার জন্য মমতা ব্যাঙ্কগুলিকেও ভর্ৎসনা করেন।বৃহস্পতিবার মধ্য কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ছাত্রছাত্রীদের ক্রেডিট কার্ড বিলির অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা রাজ্যকে বকেয়া অর্থ না দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেন। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ১০০ দিনের কাজের টাকা গত ৬ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। ইউজিসি-র টাকা অনেক জায়গায় দেওয়া হচ্ছে না। পিএইচডি পড়ুয়ারা অনুদান পাচ্ছেন না। বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা প্রদান বন্ধ রেখেছে। এইসব টাকা রাজ্য থেকে তুলে নিয়ে যায় কেন্দ্র। কিন্তু ভাগের শতাংশ সঠিকভাবে দেয় না। রাজনৈতিক কারণে অর্থনৈতিক ব্লক করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘বাবা-মায়ের আয়ের সনদ জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। কিছু বাবা-মায়ের এই অনুভূতি হচ্ছে যে আয়ের শংসাপত্রগুলি বাধ্যতামূলক। কারণ বেশ কয়েকটি ব্যাংক এটির জন্য জিজ্ঞাসা করছে। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার এই ঋণের গ্যারান্টার।কারও নাম না করে মমতা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আরও বলেন, ‘মানুষ ভুল করে, কিন্তু তা সংশোধন করা যায়।; তিনি আরও বলেন, ‘অনেক সময় মানুষ কাজ করতে গিয়ে ভুল করে। যারা কাজ করেন তারা ভুল করেন এবং যারা কাজ করেন না তারা ভুল করেন না। নেতিবাচকতা আমাদের মস্তিষ্কের কোষগুলিকে প্রভাবিত করে। তাই আসুন আমরা ইতিবাচকভাবে চিন্তা করি। কিছু লোক মানুষের দ্বারা করা ভাল কাজ দেখতে পায় না বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে, এদিনের স্টুডেন্ট ক্রেডিটস কার্ডের পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, বাংলায় কর্মসংস্থানের হার গোটা দেশের তুলনায় ভাল। এর সপক্ষে তাই তিনি ঘোষণা করেন, ৩০ হাজার চাকরি রেডি, যেকোনও দিন নিয়োগপত্র দিয়ে দেব। তার জন্য আইটিআই, পলিটেকনিকে স্কিল ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান। চাকরি প্রার্থীদের চাকরির জন্য জব ফেয়ার সেতুবন্ধনের কাজ করছে। মেধাবী পড়ুয়াদের অনেকেই বিদেশে পড়াশুনা করতে গিয়ে আর দেশে ফিরতে চান না। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ছোট ছোট ভাই-বোনেরা তোমরা বিদেশে পড়তে যাও। কিন্তু পড়া শেষ করে আবার ফিরে এসো। কারণ এ মাটি তোমাকে যা দিয়েছে, যা দিতে পারে, তা আর কোনও মাটি পারবে না। বাংলার সন্তানরা যদি বাংলায় না থাকেন, তাহলে এ রাজ্যের অর্থনীতি, সমাজ, সংস্কৃতি চালাবে কারা?’ ২০১১ সালের পর শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কাজের খতিয়ান দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, মাত্র ১০ বছরে ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়, ৫১টি নতুন কলেজ, ১৪টি মেডিক্যাল কলেজ, ২৭২টি আইটিআই, ১৭৬টি পলিটেকনিক, ৭ হাজার নতুন স্কুল, ২ লক্ষের বেশি অতিরিক্ত ক্লাস তৈরি হয়েছে। এই অনুষ্ঠানেও মমতা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। বলেছেন, ‘১০০ দিনের কাজের টাকা গত ৬ মাস ধরে বন্ধ, ইউজিসি-র টাকা অনেক জায়গায় দেয় না। পিএইচডি পড়ুয়া গ্রান্ট পাচ্ছেন না। বাংলার ঘর তৈরির টাকা পরিকল্পনা করে বন্ধ করেছে। এইসব টাকা রাজ্য থেকে তুলে নিয়ে যায় কেন্দ্র। কিন্তু ভাগের শতাংশ সঠিকভাবে দেয় না। রাজনৈতিক কারণে অর্থনৈতিক ব্লক করা হচ্ছে।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct