আপনজন ডেস্ক: প্রায় ২৫ বছর ধরে বিহারের রাজধানী শহর পাটনায় এক মুসলিম কাপড় ব্যবসায়ীর দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন রামদেব শাহ। অবশেষে ৭৫ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যৃর খবর পেয়ে ছুটে আসেন তিনি যে দোকানে কাজ করতেন সেই দোকানের মাালিক মুহাম্মদ রিজওয়ান ও তার ভাই আরমান আলম। তারা দুজনে ও আরও কয়েকজন মিলে কাঁধে তার লাশ বয়ে নিয়ে গিয়ে শ্মশানে শেষ কৃত্য সম্প্ন্ন করলেন। ফলে, সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্পের মধ্যেও নজির সৃষ্টি হল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির। এ ব্যাপারে মুহাম্মদ রিজওয়ান আলম জানান, ২২ বছর আগে রামদেব শাহ তার কাছে আসেন একটা কাজের জন্য। রিজওয়ান তাকে দোকানে কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ করলেও সেই থেকে রামদেব রিজওয়ানের একজন পরিবারের সদস্য হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছেন। রামদেব শাহ থাকতেন শাবজিবাগে। সেখান থেকে পাটনার বুদ্ধ মার্গের দোকানে আসতেন। কিন্তু কোভিডে আক্রান্ত হওয়ায় পর থেকে তিনি বহুদিন দোকানে আসতে পারছিলেন না। কিছু রিজওয়ান তাকে এতটাই ভালবাসতেন, প্রতি মাসের টাকা প্রতি মাসেই তার বাড়িতে পৌঁছে দিতেন। রামদেব শাহ যখন বৃদ্ধের পথে, তখন তার অনেক সহকর্মী তার আত্মীয়দের সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শাহ বলতেন যে তারা তার পরিবার। সেই কর্মচারীর হঠাৎ মৃত্যুর খবর পেয়ে বাড়িতে ছুটে যান রিজওয়ান আলমরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বীর মরদেহ কাঁধে করে নিয়ে যাচ্ছেন মুসলিম মুহাম্মদ রিজওয়ান। সাবজিবাগ থেকে গঙ্গার তীরে গুলবি ঘাট শ্মশান পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার পর্যন্ত হেঁটে যান। সেখানেই তাকে হিন্দু রতি মেনে দাহ করা হয়। স্থানীয়রা বলছেন, রিজওয়ানের দোকানে দুই যুগের বেশি সময় কাজ করেছেন রামদেব। এই সময়ে সবার মনে জায়গা করে নিয়েছেন রামদেব। তিনি অমায়িক মানুষ ছিলেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct