আপনজন ডেস্ক: পাত্র যোগ্য। ভালো চাকরি, পৈতৃক সম্পতি। তবুও সেই তাকে পাত্রস্থ করতে হিমসিম খাচ্ছে পরিবার। শুধু তিনিই নন। এমন সমস্যায় পড়েছেন বহু বিবাহযোগ্য যুবক। এর কারণ আর কিছুই নয়, গ্রামের দুরাবস্থা। পাত্রীপক্ষ শর্ত দিয়েছে, ওই গ্রাম ছাড়লে তবেই সেখানকার ছেলেদের সঙ্গে হতে পারে বিয়ে। বিয়ের জন্য কি শেষে ভিটেমাটি ছাড়তে হবে? হ্যাঁ, এ রকম সমস্যায় পড়েছেন নদিয়ার নাকাশিপাড়া ব্লকের অন্তর্গত বীরপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোটাবড়িগাছি গ্রামের যুবকরা। আজব গ্রাম এই মোটাবড়িগাছি। এমন গ্রামের কোনো পাত্রের হাতে মেয়েকে তুলে দিতে রাজি হচ্ছে না তাদের পরিবার। এই অবস্থার জন্য গ্রামের পরিকাঠামোকে দায়ী করছেন গ্রামের বাসিন্দারা। ভৌগোলিক ভাবে প্রত্যন্ত এলাকা। তার উপর রাস্তা নেই, নেই পানীয় জলের সুষ্ঠু ব্যবস্থা। প্রায়শই বিদ্যুৎ-বিভ্রাট ঘটে। বীরপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় সাত হাজার মানুষের বসবাস। সেই গ্রামে কেন্দ্র কিংবা রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ছিটেফোঁটা সুবিধাও এখানে পৌঁছায়নি। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং বাংলা আবাস যোজনাকে নিয়ে রাজ্য রাজনীতি যতই সরগরম হোক, এখানে সে সবের বালাই নেই। কারণ অধিকাংশই বাড়িই কাঁচা। পুরুষদের পেশা বলতে মূলত চাষবাস এবং পশুপালন। শিক্ষার ব্যবস্থাও তথৈবচ। দুটো স্কুল আছে বটে, তবে সে দুটিও পাঁচ থেকে সাত কিলোমিটার দূরে। কিন্তু ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতের কারণে ধুঁকছে সেই স্কুল। স্বাস্থ্য পরিষেবা বলতে বেথুয়াডহরি গ্রামীণ হাসপাতাল। যার ভৌগলিক দূরত্ব ২২ কিলোমিটার। আপদকালীন পরিস্থিতিতে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাটাও নেই। রাতবিরেতে অসুস্থ হয়ে পড়লে বিপাকে পড়েন এই গ্রামের মানুষজন। সেই গ্রামের বাসিন্দা রিনা দেবী বলেন, 'আমার ছেলের বিয়ে দিতে পারছি না। কৃষিজমি-সহ অন্যান্য যা কিছু আছে তাতে দিন গুজরানে কোনো অসুবিধা হয় না। কিন্তু গ্রামের নাম শুনলেই মুখ ফেরাচ্ছে সবাই।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct