আপনজন ডেস্ক: আধুনিক যুগে ক্যানসার রোগ সবচেয়ে বেশি প্রাণঘাতি। ক্যানসারের কোষ যখন রক্তে মিশে গিয়ে শরীরের অন্যান্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে তখন এই রোগ ভয়ানক হয়ে ওঠে। এক গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে, স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের ঘুমন্ত অবস্থায় ক্যানসারের কোষ সবচেয়ে বেশি রক্তে প্রবেশ করে। সুইস ফেডারেল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং ইউনিভার্সিটি অব ব্যাসেল-এর গবেষকরা গবেষণাটি চালিয়েছেন। যখন ক্যানসারে আক্রান্ত টিউমারের কোষগুলো রক্তের মাধ্যমে শরীরের অন্যত্র ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে সেই অবস্থাকে বলা হয় স্টেজ চার ক্যানসার। গবেষণায় বলা হয়েছে, ক্যানসার কোষের উৎপত্তি বা দ্রুত ছড়িয়ে পড়া ঠিক কোন কোন বিষয়ের উপর নির্ভর করে তার সঠিক ব্যাখা পাওয়া যায় না। তবে এই গবেষণায় মানুষের শারীরতত্ত্বের এমন কিছু বিষয়ের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে যা ক্যানসার চিকিৎসায় খুব কার্যকর হতে পারে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, মেলাটনিন, টেস্টোস্টেরন ও গ্লুকোকর্টিকয়েডের মতো সার্কাডিয়ান হরমোনগুলি ক্যানসারে আক্রান্ত টিউমারের অবস্থা অনেকটাই নির্ধারণ করে। সার্কাডিয়ান হরমোনগুলো মানুষের মানসিক, শারীরিক ও আচরণগত পরিবর্তনকে প্রভাবিত করে। মানুষের শরীর সক্রিয় থাকার সময় ক্যানসার আক্রান্ত কোষগুলো অনেকটাই কম বৃদ্ধি পায়। প্রথমে ইঁদুরের উপর গবেষণা করে এই বিষয়টি জানা যায়। পরে ৩০ জন স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত মহিলার উপর এই গবেষণা চালানো হয়। দেখা যায় যে ক্যানসার কোষগুলোর সক্রিয়তা রোগীদের ঘুমন্ত অবস্থায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। গবেষক নিকোলা অ্যাসেটো বলেছেন, এই গবেষণার ফলাফল দেখে তিনি অবাক হয়েছেন। কারণ চিকিৎসক মহলে এতদিন ধারণা ছিল দিনের যে কোনো সময়ে ক্যানসারের কোষ সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। দিনে নির্দষ্ট পরিমাণে ঘুম কখনওই শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক নয়। তাঁরা বলেছেন, ক্যানসার কোষের সক্রিয়তা কেবলমাত্র ঘুমের উপর নয়, হরমোনের পরিবর্তনের উপরেও নির্ভর করে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct