সম্প্রীতি মোল্লা, কলকাতা, আপনজন: লাখ টাকার আর্থিক জরিমানা হলো বহুজাতিক সংস্থা ডাবর কোম্পানি কে। মধূ বিক্রিতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিজ্ঞাপনের জন্য এই জরিমানা করেছে রাজ্য ‘ফুড সেফটি আপিল ট্রাইব্যুনাল’। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জরিমানার টাকা জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে। গত মঙ্গলবার এই রায় দিয়েছেন ফুড ট্রাইবুনালের বিচারক প্রবীর কুমার মিশ্র। আদেশনামায় উল্লেখ রয়েছে , -' ডাবর কোম্পানি তাদের মধূ কে ‘এক নম্বর’ বলে যে বিজ্ঞাপন দেয়, তা বিভ্রান্তিকর এবং প্রতারণামূলক। লন্ডনের যে কোম্পানির সার্টিফিকেট দেখানো হচ্ছে, তারা দেশ জুড়ে সব কোম্পানির মধূর তুলনামূলক বিচার করেনি। শুধুমাত্র দুটি কোম্পানির নিরিখে ডাবরের মধূকে এগিয়ে রাখা হয়েছে মাত্র। তাদের সার্টিফিকেটে কোথাও ডাবর হানিকে 'এক নম্বর' বলা হয়নি'। তাই এই বিজ্ঞাপন যথাযথ নয় বলে মনে করছে আদালত ।
আদালত সূত্রে প্রকাশ , ডাবর হানির বিজ্ঞাপনে দেশের এক নম্বর এবং বিশ্বের এক নম্বর মধূ বলে দাবি করা হয়ে থাকে। মধূর বোতলেও লেখা থাকে ‘নম্বর ওয়ান’ বিষয়টি নিয়ে প্রথমে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন কলকাতা পুরসভার খাদ্য বিভাগের আধিকারিক পার্থ সারথি দত্ত। মধূর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে তার গুণমান পরীক্ষা করে দেখা হয়। এরপর মামলা দায়ের হয় কলকাতা পুরসভার নিজস্ব আদালতে। গত ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে পুর-আদালত ডাবর কোম্পানিকে দুই লক্ষ টাকা জরিমানা করেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য ‘ফুড সেফটি আপিল ট্রাইব্যুনালে’ আবেদন করে থাকে ডাবর কোম্পানি। গত মঙ্গলবার আদালতে শুনানি পর্বে কোম্পানির আইনজীবী শমীক চট্টোপাধ্যায় বলেন , -' ডাবর ১৩০ বছরের পুরনো কোম্পানি। তারা সুনামের সঙ্গে শতাব্দী ধরে ব্যবসা করে আসছেন। তাদের সামগ্রী বিক্রির জন্য কোনও ভূল বা মিথ্যে তথ্যের প্রয়োজন পড়ে না'। লন্ডনের বিখ্যাত কোম্পানীর সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ীই তারা এই দাবি করেছেন বলে তিনি জানান । আদালতকে তিনি আরও জানান, -' আপাতত বিজ্ঞাপনে এক নম্বর শব্দটি আর ব্যবহার করা হচ্ছে না। মধূর বোতল থেকে সেই স্টিকার খুলে নেওয়া হয়েছে'। অপরদিকে আদালত রায় অবশ্য যথাযথ বলেই মনে করছেন কলকাতা পুরসভার আইনজীবী। পুরসভার আইনজীবী সব্যসাচী রায় বলেন, -' ডাবরের আবেদন খারিজ করে আদালত সঠিক রায় দিয়েছে। লন্ডনের কোম্পানির সার্ভে রিপোর্ট ভুলভাবে দেখানো হয়েছে। সেখানে কোথাও ডাবরের মধূকে এক নম্বর বলা হয়নি। ওরা এই দাবি করতে পারে না'। ট্রাইবুনালের রায় প্রসঙ্গে ডাবরের আইনজীবী বলেন, -' আমরা কোনও মিথ্যা বা ভূল তথ্য দিইনি। তবে আদালত কেন ওই রায় দিল তা আদালতের অর্ডার কপি পড়ে দেখতে হবে। তারপর উচ্চ আদালতে যাওয়া হবে কি না তার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে'।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct