আপনজন ডেস্ক: কংগ্রেস শাসিত ছত্তিশগড় রাজ্যের পুলিশের হাতে এক টিভি উপস্থাপকের গ্রেফতার আটকাতে উদ্যোগী হতে দেখা গেল বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশের পুলিশকে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উঠল রাজ্য পুলিশের এখতিয়ার–সংক্রান্ত সাংবিধানিক প্রশ্ন। দিন কয়েক আগে কেরলে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধির নির্বাচনী কেন্দ্র ওয়েনাডে এক দলীয় অফিসে ভাঙচুর চালিয়েছিলেন কিছু যুবক। সেই ঘটনার পর রাহুল বলেছিলেন, ‘কিছু বাচ্চা ছেলে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়ে ওই কাজ করেছে। ওদের ক্ষমা করা উচিত।’ রাহুল ওই প্রতিক্রিয়া উদয়পুরে দরজি হত্যার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দিয়েছেন বলে বেসরকারি হিন্দি টিভি চ্যঅনেল জি নিউজ সম্প্রচার করে। খবরটি এমনভাবে সম্প্রচার করা হয়, যাতে মনে হয় উদয়পুরের দর্জি কানহাইয়া লালের হত্যাকারীদের পক্ষে রাহুল ওই কথা বলছেন। মহানবী (সা.)–এর বিরুদ্ধে নূপুর শর্মার আপত্তিকর মন্তব্যের সমর্থনে ওই দরজি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করায় তাঁকে হত্যা করেন দুই ব্যক্তি। ভুয়ো খবরের বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় কংগ্রেস শাসিত ছত্তিশগড় ও রাজস্থানে দুটি পৃথক মামলা করা হয়। জি নিউজের উপস্থাপক রোহিত রঞ্জনের গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে ছত্তিশগড় পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার ভোরে দিল্লির লাগোয়া উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে তাঁর বাসভবনে পৌঁছায়। তাকে ভিন্ন রাজ্যের পুলিশের গ্রেফতার করতে আসার খবর ওই সাংবাদিক গাজিয়াবাদ পুলিশকে জানিয়ে দেন।
এ ছাড়া তিনি টুইট করেও জানতে চান, এভাবে স্থানীয় পুলিশকে না জানিয়ে গ্রেফতার করা কেমন আইন? এরপর শুরু হয় ছত্তিশগড় ও উত্তর প্রদেশের পুলিশের বাদানুবাদ। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যের পুলিশের দাবি, তাদের না জানিয়ে অন্য প্রদেশের পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারে না। ছত্তিশগড়ের পুলিশের দাবি, জানানোর কোনো প্রয়োজনই নেই। কারণ, তাদের কাছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। এই বাদানুবাদের মধ্যে উত্তর প্রদেশের পুলিশ জোর করে রোহিতকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। জি নিউজের ওই টিভি উপস্থাপকের বিরুদ্ধে লঘু ধারায় জামিনযোগ্য মামলা করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। ছত্তিশগড়ের রাজধানী রায়পুর থেকে আসা পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করতে আইনের সাহায্য নেবে কি না, তা এই মুহূর্তে নিশ্চিত নয়।ওয়েনাদের ঘটনায় রাহুলের মন্তব্যসহ ওই ভিডিও শেয়ার করেছিলেন বিজেপির নেতা রাজ্যবর্ধন রাঠোরও। অভিযোগ করা হয়েছে তার বিরুদ্ধেও। সামাজিক মাধ্যমের সাহায্যে এ ধরনের ভুয়া খবর সর্বত্র ছড়িয়েও দেওয়া হচ্ছে। শাসকদল বিজেপির মিডিয়া সেল এ কারণে নানা রকম সমালোচনার মধ্যেও পড়ছে। জি নিউজের মালিক সুভাষ চন্দ্র বিজেপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। সম্প্রতি বিজেপির সমর্থনে রাজস্থান থেকে রাজ্যসভার নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে হারেন। জি নিউজ জানিয়েছে, রাহুলের বক্তব্য ভুলভাবে ব্যবহার করায় চ্যানেলের পক্ষ থেকে দুঃখপ্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়েছিল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct