নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর, আপনজন: সৌদি আরবের এক সংস্থা বাইতুল মাল ফান্ড থেকে মোটা অঙ্কের টাকা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে এলাকার অসহায়, দিনমজুর, বিধবা ও গরীব মহিলাদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠলো এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। রবিবার অভিযুক্ত প্রতারক ব্যক্তির বাড়িতে টাকা ফেরত চাইতে গেলে এক মহিলা এজেন্টকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে।ঘটনাটি ঘটেছে চাঁচলের আদর্শপল্লী এলাকায়।মারধর করে বাড়িতে তালা মেরে পালিয়ে যায় ওই প্রতারক বলে খবর। প্রায় ঘন্টাখানেক ধরে প্রতারকের বাড়ির দরজায় ধর্নায় বসে থাকেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার মিলনগড় এলাকার রহিমা পারভীন নামে এক মহিলা। বিশেষ সূত্রে জানা যায়,ওই প্রতারকের নাম ফারুক প্যাটেল। বাড়ি চাঁচলের আদর্শপল্লী এলাকায়।গোপনভাবে চাঁচলের গোরক্ষপুর এলাকার অফিস খুলে এই ধরনের প্রতারণার কাজ চালাতো। এমনকি চাঁচলের একাধিক জায়গায় এই ধরনের অফিস খুলে রেখেছিল।
জানা যায়, মোটা অঙ্কের টাকা পাইয়ে দেওয়ার নামে গতবছর জানুয়ারি মাসে একটি ব্যাঙ্কের শাখা খুলে গ্রাহকদের কাছ থেকে ৫৩০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত বই করার টাকা নেন ফারুক প্যাটেল বলে অভিযোগ।বলা হয়েছিল এই একাউন্ট খুললে এলাকার গরীব দুস্থরা পাবে তিন দফায় এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা এবং পরবর্তীকালে দুই হাজার করে ভাতাও পাওয়া যাবে।এই ফাঁদে পা বাড়ান চাঁচল মহকুমার হাজার হাজার অসহার খেঁটে খাওয়া মানুষ।এই চক্র চলছে গত দেড় বছর ধরে। একাউন্ট খোলার ৪২ দিনের মাথায় প্রথম কিস্তির টাকা ঢুকবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।কিন্ত দেড় বছর কেটে গেলেও একাউন্টে ঢুকেনি কোনো টাকা বলে দাবি। চাঁচলের গোরক্ষপুরে এই চক্র চলছিল একটি নির্দিষ্ট বাড়িতে।শুধু সেখানে নয়,বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠান করা হয়েছিল এই প্রতারণা চক্র অফিস।গ্রাহকদের জোগাড় করার জন্য বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে রাখা হয়েছিল প্রায় ৫০০ জন এজেন্ট। শুধু গ্রাহকরা নয়,ফারুক প্যাটেলের কাছে প্রতারিত হয়েছে এজেন্টরাও।হরিশ্চন্দ্রপুরের মিলনগড় গ্রামের গ্রাহকরা মহিলা এজেন্ট রহিমা পারভীন কে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। সেই চাপে রহিমা মূল প্রতারক ফারুক প্যাটেলের বাড়িতে টাকা চাইতে আসলে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এমনকি রহিমার ব্যাগ ছিড়ে ফারুক নিজের বাড়িতে তালা মেরে পালিয়ে যায়। তারপরেই এদিন টাকা ফেরতের দাবিতে প্রায় এক ঘন্টা ধরে ধর্নায় বসেন ফারুক প্যাটেলের বাড়ির দরজায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় চাঁচল থানার পুলিশ।পুলিশের আশ্বাসে রহিমা ধর্না তুলে নেন। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চাঁচল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন আক্রান্ত রহিমা। শুধু রহিমা নয় এদিন ফারুক প্যাটেলের বাড়ির আশেপাশে ছিল বহু প্রতারিত এজেন্ট। তারা সংবাদ মাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে চাননি। বাড়িতে তালা থাকায় ও বারবার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও ফারুক প্যাটেলের প্রতিক্রিয়া পায়নি সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা। চাঁচল থানার আই.সি পুর্ণেন্দু কুন্ডু জানিয়েছেন,অভিযোগ পেয়েছি,বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct