নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর, আপনজন: বৃহস্পতিবার আদিবাসী সম্প্রদায়ের হুল দিবস পালিত হল। সকাল থেকেই আদিবাসী নৃত্যের সঙ্গে এই দিনটি উদযাপন করলো মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের দৌলতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়োল গ্রামের আদিবাসী মানুষেরা।এদিন হুলদিবসের পাশাপাশি আদিবাসী এলাকায় সাঁওতালি অলচিকি ভাষায় স্কুলের দাবি জানালেন এলাকার মানুষজন। তাদের অভিযোগ,আদিবাসী এলাকাগুলো এখনো শিক্ষায় পিছিয়ে রয়েছে।৯৫ শতাংশ আদিবাসী মানুষ দরিদ্র সীমানার নীচে বসবাস করে।এলাকায় বিশেষ কাজ না থাকায় ভিন রাজ্যে কাজ করতে যেতে হয়।নিজ রাজ্যে কর্ম সংস্থান থাকলে অন্ন জোগাড়ের জন্য ভিন রাজ্যে পাড়ি দিতে হবে না।
এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাই স্কুল শিক্ষক অনিল মুর্মু, সিডিআর মনোজ মুর্মু, ক্লাব সম্পাদক গুলসেন হাঁসদ ও দৌলতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মোবারক হোসেন সহ অন্যান্যরা। এদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও খেলাধুলার পাশাপাশি হুল দিবসের ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরেন বিশিষ্টজনেরা।ইতিহাসের পাতা উল্টালে জানা যায়,হুল দিবস সাঁওতালদের জাত্যভিমান ও গৌরবের দিন।১৮৫৫ সালে ৩০ জুন শুরু হয়েছিল সাঁওতাল বিদ্রোহ। যা শেষ হয় ১৮৫৬ সালের নভেম্বর মাসে। এই সাঁওতাল বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন সিধু, কানহু, চাঁদ ও ভৈরব প্রমুখ সাঁওতাল নেতারা। সাঁওতাল বিদ্রোহের লেলিহান শিখা ব্রিটিশ সরকারের মসনদ কাঁপিয়ে দিয়েছিল।সাঁওতাল বিদ্রোহ প্রথম শুরু হয় পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলা ও বিহারের ভাগলপুরে।১৮৫৫ সালের ৩০ জুন প্রায় ৩০ হাজার সাঁওতাল বীরভূম থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে পদযাত্রা শুরু করে,যা ভারতের প্রথম বৃহৎ পদযাত্রা।অনেক ইংরেজ সহ প্রায় দশ হাজার সাঁওতাল মারা যায় এই বিদ্রোহে। সিধু কানহু, চাঁদ ও ভৈরব সহ প্রমুখ নেতারমৃত্যুতে ১৮৫৬ সালের নভেম্বর মাসে শেষ হয় সাঁওতাল বিদ্রোহ। সাঁওতাল বিদ্রোহের উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ শাসনের অত্যাচার এবং দেশীয় জমিদার ও অসাধু ব্যবসায়ীদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct