নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর, আপনজন: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চলছে সিবিআই তদন্ত।এর মধ্যেই আপার প্রাইমারিতে চাকরি দেওয়ার নাম করে আর্থিক প্রতারণার আরো একটি অভিযোগ সামনে এল। এবার চাকরির নামে প্রতারণার শিকারের অভিযোগ করলেন খোদ তৃণমূল নেতা। তিনি আবার গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য! উচ্চ প্রাথমিকে চাকরি দেওয়ার নাম করে যুব তৃণমূল নেতার কাছ থেকে সাড়ে ১৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তৃণমূলেরই এক নেতা।ঘটনাস্থল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সাদলিচক এলাকা।ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতেই হুলস্থুল পড়েছে এলাকায়। সূত্রের খবর, আপার প্রাইমারিতে শিক্ষকতার চাকরি দেওয়ার নাম করে সাড়ে ১৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের সুলতান নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ডহরা গ্রামের বাসিন্দা মহিদুর রহমান ওরফে বাদল নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে।এলাকায় তিনি তৃনমূল নেতা বলে পরিচিত।প্রতারিত হয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের সাদলিচক গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন সাদলিচক গ্রামের বাসিন্দা তথা গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য আরজাউল হক।ওই প্রতারক তথা তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন প্রতারিত আরজাউল হকের বাবা মহম্মদ সাজাহান। অভিযোগের ভিত্তিতে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
আরজাউল হক জানান,সে ২০১৯ সালে আপার প্রাইমারি টেট পরীক্ষায় পাশ করে এবং ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকও পাই।তবে মেরিট লিস্টে নাম আসে নি।কিভাবে পরিচয় হল ওই প্রতারকের সাথে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায় মহিদুরও তৃণমূল করেন। সেই সূত্রেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। পরে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। নিজের প্রভাবের কথা বলে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। এরপরেই ফাঁদে পা দেন আরজাউল। দিয়ে দেন ৩ দফায় সাড়ে ১৪ লক্ষ টাকা।তবে চাকরি করাতে পারেনি। পরবর্তী কালে জানতে পারেন সে প্রতারণার শিকার হয়েছে।টাকা ফেরত চাইতে গেলে ওই যুবক টালবাহানা করতে শুরু করে।এই নিয়ে গ্রামে সালিশি সভা বসানো হয়।এর পর দুই কিস্তিতে ২ লক্ষ টাকা ফেরত দিলেও এখন সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা দিতে অস্বীকার করছে।টাকা চাইতে গেলেই হুমকি মিলছে বলে অভিযোগ।অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা মহিদুর রহমানের সঙ্গে ফোন মারফত যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ফোন বন্ধ থাকায় এই ব্যাপারে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি দেবদূত গজমের জানান,অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। এই বিষয়ে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা মালদা জেলার তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী বলেছেন, ‘‘কেউ চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিলে তাঁর দলীয় পরিচয় দেখা হবে না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct