আব্দুস সামাদ মন্ডল, কলকাতা, আপনজন: মুসলিমদের পবিত্র উৎসব ঈদুল আজহায় পশু কুরবানি দেওয়া হয়। এ বছর রাজ্যে কুরবানি নিয়ে একটি রিট পিটিশনের ভিত্তিতে জারি হওয়া কলকাতা হাইকোর্টে নির্দেশ পালনে রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করল। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বেশ কিছু বিধি নিষেধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ওই নির্দেশে সংখ্যালঘু জনগণকে ঈদুজ্জোহায় পশু উৎসর্গকে কেন্দ্র করে যাতে সচেতনতা অবলম্বন করা হয় সেকথাই বলা হয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ১৪ বছরের বেশি বয়স্ক, বিকলাঙ্গ কিংবা অসুখে ভুগছে এমনই পশু কুরবানি করা যাবে, না হলে আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। গত ২২ জুন এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয় নোটিশ জারি করেছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে বেশ কতকগুলি নিয়ম
“মহামান্য কলকাতা হাইকোর্টের আদেশানুসারে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি :
২০১৮ সালের ৩২৮ নং রিট পিটিশন ও সেইসঙ্গে ২০১৫ সালের ২৪৩১৫ (ডব্লিউ) নং রিট পিটিশনের মামলায় মহামান্য কলকাতা হাইকোর্টের আদেশানুসারে সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো হচ্ছে যে, ১০/০৭/২০২২ তারিখে যে ঈদুজ্জোহা উৎসব অনুষ্ঠিত হবে, সে সম্পর্কে নিম্নোক্ত ব্যবস্থাগুলি কঠোর ভাবে মেনে চলতে হবে
১) বলি দেওয়া যেতে পারে এই মর্মে শংসাপত্র নেওয়া হয়নি এমন কোনও পশু কেউ বলি দেবেন না (পশু অর্থে এখানে ষাঁড়, বলদ, গরু, বাছুর, পুং বা স্ত্রী মোষ, মোষের বাচ্চা ও মুস্ত-ছেদিত মোষ বলা হচ্ছে)
২) পুরসভার চেয়ারম্যান অথবা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং একজন পশু চিকিৎসক তাঁদের যৌথ স্বাক্ষরের অধীনে কোনও পশু বলি দেওয়ার যোগ্য কিনা সে ব্যাপারে শংসাপত্র জারি করতে পারেন, যদি তাঁরা উভয়েই এই সম্পর্কে নিশ্চিত হন ও লিখিতভাবে মত প্রকাশ করেন যে পশুটি ১৪ বছরের বেশি বয়স্ক ও কাজ বা প্রজননের পক্ষে অনুপযুক্ত অথবা পশুটি বয়স, আঘাত, বিকলাঙ্গতা, বা কোনও দুরারোগ্য অসুখের কারণে বরাবরের মতো কাজ বা প্রজননের পক্ষে অক্ষম হয়ে পড়েছে।
৩) কোনও ব্যক্তিকে যদি এই শংসাপত্র দিতে কেউ অস্বীকার করেন তাহলে সেই ক্ষুব্ধ ব্যক্তি উক্ত শংসাপত্র না পাওয়ার ঘটনার ১৫ দিনের মধ্যে বাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানাতে পারবেন
৪) একটি পশু, যেটির সম্বন্ধে এই ধরনের শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে, সেটি শুধুমাত্র পুরসভার কোনও কসাইখানায় বা স্থানীয় প্রশাসনের চিহ্নিত অন্য কোনও কসাইখানায় বলি দেওয়া যাবে
৫) যেসব পশুর বলির জন্য শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে, সেগুলিকে কোনও উন্মুক্ত স্থানে বলি দেওয়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
৬) ১৯৫০ সালের পশ্চিমবঙ্গ পশু বলি নিয়ন্ত্রণ আইনের সংস্থানসমূহ রূপায়িত হচ্ছে কিনা তা পরিদর্শনের জন্য পুরসভার চেয়ারম্যান অথবা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির লিখিত প্রাধিকারপ্রাপ্ত কোনও ব্যক্তিতে কোনও প্রাঙ্গণ পরিদর্শনের ব্যাপারে বাধা দেওয়া যাবে না
৭) যে বা যিনিই ১৯৫০ সালের পশ্চিমবঙ্গ পশু বলি নিয়ন্ত্রণ আইনের সংস্থানসমূহ লঙ্ঘন করবেন, তিনি কারাবাস, যার মেয়াদ ছয় মাস পর্যন্ত বর্ধিত হতে পারে বা জরিমানা, যার পরিমাণ ১০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে, অথবা উভয় দত্তেই দণ্ডিত হতে পারেন
৮) মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের রায়ে মহম্মদ হানিফ কুরেশি ও অন্যান্য বনাম বিহার রাজ্যের মামলায় ব্যক্ত করা হয়েছে যে, গরু বলি দেওয়া ঈদুজ্জোহা উৎসবের কোনও অঙ্গ নয় এবং এটি ইসলাম ধর্মের অধীনে পালনীয় কোনও ধর্মীয় প্রয়োজন নয়।
৯) মহামান্য কলকাতা হাইকোর্টের ও সুপ্রিমকোর্টের প্রাসঙ্গিক সিদ্ধান্তসমূহ বিভাগীয় সরকারি ওয়েবসাইট http://wbard.gov.in এ দেখতে পাওয়া যাবে।”
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct