রঙ্গিলা খাতুন, মুর্শিদাবাদ, আপনজন: সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার। কিন্তু তা অন্যসব দিনের চেয়ে ছিল আলাদা। কারণ ওইদিন মুর্শিদাবাদ থেকে ১৫ ক্রোশ দক্ষিণে ভাগিরথী নদীর তীরে পলাশীর আম্রকাননে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যাসহ পুরো উপমহাদেশের স্বাধীনতার কবর রচিত হয়েছিল। ২৩ জুন পলাশীর প্রান্তরে নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও লর্ড ক্লাইভের মধ্যে এক যুদ্ধ নাটক মঞ্চায়িত হয়। ইতহাসে যা পলাশীর যুদ্ধ নামে খ্যাত হলেও বাস্তবে তা ছিল ‘দাঙ্গা’। ঐতিহাসিকদের মতে নবাববাহিনী একটি করে ঢিল ছুঁড়লেও ইংরেজ সেনারা গুঁড়ো হয়ে যেত, তাদের সংখ্যা এতই কম ছিল। এতে নবাব বাহিনীর পক্ষে সৈন্যসংখ্যা ছিল প্রায় ৬৫ হাজার এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পক্ষে ছিল মাত্র ৩ হাজার। কামানেও সিরাজদৌলার সংখ্যাধিক্য ছিল। যুদ্ধের ময়দানে নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রধান সেনাপতি মীরজাফর ও তার অনুসারী প্রায় ৪৫ হাজার সৈন্য নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। ফলে যুদ্ধে স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তির পরাজয় অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। যদিও সাহসী সেনাপতি মীরমদন এবং বিশ্বস্ত দেওয়ান মোহনলাল, ফরাসি সেনাপতি সিনফ্রেকে সাথে নিয়ে প্রাণপণ লড়াই চালান। যুদ্ধে মীরমদন কামানের গোলার আঘাতে মারা যান এবং মোহনলাল আহত হন। মীরমদন মোহনলালের সেনারাই রবার্ট ক্লাইভের বাহিনীকে পর্যুদস্ত করে ফেলেছিল প্রায়। কিন্তু নবাব সিরাজ মীরজাফরের ভুল এবং অসৎ পরামর্শে যুদ্ধ বন্ধ রাখার আদেশ দেন। এতে নবাববাহিনী ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।পথচলা শুরু করে ব্রিটিশ । ভারত পরাধীনতার গ্লানিতে ডুবে যায়। সেই ২৩ জুন স্মরণে ২৬৫তম পলাশি দিবস পালিত হল ঐতিহাসিক পলাশির প্রান্তরে ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct