আজিম শেখ, বীরভূম, আপনজন: এ রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকরা ভারতের যে কোন রাজ্যে বিপদে পড়লেই তাদের উদ্ধারে ছুটে যান মোহাম্মদ রিপন। বীরভূম জেলার পাইকর থানার কাঠিয়া গ্রামের বছর চব্বিশের এক যুবক দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন সারা ভারত। ভারতবর্ষের যেকোনো রাজ্যেই পরিযায়ী শ্রমিকরা বিপদে পড়লেই তার কাছে ফোন আসে, ঠিকাদাররা কাজ করিয়ে নিয়ে টাকা দিতে না চাইলেও তিনি উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন। লকডাউনের সময় তিনি বহু পরিযায়ী শ্রমিক উদ্ধার করেছেন। দিন দুয়েক আগে বীরভূম জেলার পাইকর থানার পাঠাগাছি আহাদুল সেখ ওড়িশারাজ্যের জগতসিংপুর জেলার কুগঞ্জ এলাকাতে কাজ করতেন। ঠিকাদারের কাজ করার পর পারিশ্রমিক পাচ্ছিলেন না বলে বাড়িতে চলে আসেন আহাদুল। ঠিকাদারের সঙ্গে নিয়মিত ফোনে কথা হতো তার ও তার পরিবারের। ঠিকাদার আহাদুলকে আবার ডেকে নেন টাকা দেওয়ার নাম করে কিন্তু তাকে টাকা দেয়নি বরং চারদিন ধরে আটকে রাখে ও তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় ঠিকাদার।আহাদুল শেখ এর পরিবার ছেলের জন্য অত্যন্ত দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। গ্রামের সামাজিক কর্মী রিকির মাধ্যমে আমার সাথে যোগাযোগ করে। পরে আমার সাথে যোগাযোগ করে এবং সহযোগিতার চান। রিপন জানান, আহাদুল শেখের হাড় হিম করা ঘটনা তার গ্রামের লোকের কাছে শোনার পরই ওড়িশা রাজ্যের জগতসিংপুর জেলার এসপির সাথে কথা বলি। এসপি সমস্ত ঘটনা শোনার পর কুগঞ্জ থানার সাথে যোগাযোগ করে ও আমাদেরকে সেখানকার ওসির নম্বর দেন। সাথে সাথে ওসির সাথে যোগাযোগ করি। তার কিছুক্ষণ পরেই উদ্ধার করা হয় আহাদুল শেখকে। থানার তৎপরতায় সেই রাতেই ট্রেনে করে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয় আহাদুলকে। আহাদুল জানান, ওড়িশাতে ঠিকাদারের কাছে কাজ করতাম। কাজ করার দুমাসের টাকা ঠিকাদার দেয়নি তারপর আমি বাড়ি চলে এসেছিলাম। বাড়িতে আসার পর ঠিকাদারকে ফোন করে টাকার জন্য বললে তিনি বলে আবার কাজে আসতে হবে তারপরে টাকা দিব। আমি টাকার জন্য বাধ্য হয়ে আবারো ওড়িশা যাযই। কিন্তু সেখানে ঠিকাদার আমাকে মারধর করে ও একটা ঘরে বন্দী করে রাখে এবং আমার মোবাইল পর্যন্ত কেড়ে নেয়। আমি ওখানে কাজ করার সময় কয়েকজন স্থানীয় মানুষের সঙ্গে খুব ভালো পরিচয় ছিল। তারা আমার ব্যাপারটি জানতে পারে এবং পশ্চিমবঙ্গে আমার ভাইয়ের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করে।। আমাকে উদ্ধারের জন্য এগিয়ে আসে মোহাম্মদ রিপন দাদা। আমাকে কুগঞ্জ থানার পুলিশ উদ্ধার করে সেই রাতেই ট্রেন ধরে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় আমি এখন সুস্থ ও স্বাভাবিক আছি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct