সম্প্রীতি মোল্লা , কলকাতা, আপনজন: সোমবার ফের নজিরবিহীন নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।এদিন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতিকে অপসারণের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের। প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের মামলায় এবার মানিক ভট্টাচার্যকে পর্ষদের সভাপতি পদ থেকে সরানোর নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।এই নির্দেশ দ্রুত কার্যকর করতে বলা হয়েছে আদালতের তরফে। আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার দুপুর দুটোর মধ্যে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হাইকোর্টের তরফে। নতুন সভাপতি নিযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত পর্ষদ সভাপতির দায়িত্বে সামলাবেন পর্ষদ সচিব। নতুন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্বে থাকবেন পর্ষদ সচিব রত্না চক্রবর্তী বাগচী। পাশাপাশি এদিন পর্ষদের পেশ করা নথি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠাতে বলল হাইকোর্ট।এদিন আদালত পর্ষদ সভাপতির পদে নতুন কারও নাম সুপারিশ করতে পারে রাজ্য সরকার বলে জানিয়েছে ।সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস জানায়, '- হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও একাধিক তথ্য না পাওয়ায় দায়ী মানিক ভট্টাচার্য। আদালতের কাছে যে নথি পেশ করা হয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে'। সেইসাথে আদালতের নির্দেশ যথাযথ পালন করা হয়নি বলে সিঙ্গেল বেঞ্চ জানায়।ইতিপূর্বে গত ১৩ জুন মানিক ভট্টাচার্যকে নিজাম প্যালেসে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই।
অভিযোগ, ২০১৪'র টেটে দ্বিতীয় নিয়োগ তালিকায় থাকা ২৬৯ জনকে বেআইনিভাবে বাড়তি ১ নম্বর করে দেওয়া হয়েছে। সিবিআই সূত্রে প্রকাশ , এই দু'জনের থেকে তদন্তকারীরা জানতে চেয়েছিলেন , -' কার নির্দেশে ২০১৪'র টেটে দ্বিতীয় নিয়োগ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল ? শুধু ২৬৯ জনকেই কেন ১ নম্বর করে বাড়ানো হল ? নম্বর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কে নিয়েছিল ? সরকারি ফাইলে তার কোনও তথ্য আছে কি না'। জানা গেছে, এইসবের সদুত্তর দিতে পারেননি পর্ষদ এর সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার দুপুর দুটোর মধ্যে সশরীরে মানিক ভট্টাচার্যকে আদালত হাজিরা দিতে হবে। সোমবার এই নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়।পাশাপাশি , প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের জমা দেওয়া নথি দিল্লির ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।এদিকে, এদিনের শুনানিতে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় যারা ২০১৪-র প্রার্থী, তাঁরা ২০১৭-তে চাকরি পেয়েছে। সেই চাকরিপ্রাপকদের জেলাভিত্তিক তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে এই নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করছে সিবিআই। এমনকি চাকরি হারিয়েছেন অনেকেই। জেলার প্রাথমিক স্কুল সংসদ তথ্য সংগ্রহ করে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদকে জমা দিচ্ছে। এদিনের শুনানিতে আদালতের নির্দেশ মত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ২৭৮৭ জনের আবেদন পত্র জমা করতে পারলো না। এই ২৭৮৭ জনের আবেদন চেয়ে পাঠিয়েছে হাইকোর্ট। এই ২৭৮৭ জনের শুধুমাত্র রোল নাম্বার জমা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এদিন পর্ষদের এই ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়।কেন সেই নথি জমা দেওয়া যায়নি? এই প্রশ্নের জবাবে পর্ষদ এর আইনজীবী এজলাসে জানান, -' প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে এই মুহূর্তে ২৭৮৭ জনের আবেদন নেই'।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct