সম্প্রীতি মোল্লা, কলকাতা, আপনজন : শুক্রবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে রাজ্য বিদ্যুৎ সংস্থার কর্মীদের ডিএ সংক্রান্ত মামলায় কড়া নির্দেশ আদালতের।আদালত অবমাননার মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্ট আগামী ২৩ জুনের মধ্যে কর্মীদের প্রাপ্য ডিএর পাঁচ ভাগের একভাগ মিটিয়ে দিতে বলেছে এই নির্দেশ কার্যকর না হলে বিদ্যুৎ সংস্থা দুটির কর্মকর্তাদের বেতন বন্ধের হুশিয়ারি পর্যন্ত দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের সিঙ্গেল বেঞ্চ।এদিন গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার। উল্লেখিত নির্দেশিকায় বলা হয়েছে , -' আগামী ২৩ জুনের মধ্যে রাজ্যের দুই বিদ্যুত্ সংস্থার বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মিটিয়ে দিতে হবে। প্রায় ২০ হাজার কর্মীর বকেয়া মহার্ঘ ভাতার পাঁচ ভাগের এক ভাগ মিটিয়ে দিতে হবে। এই নির্দেশ যে পালন করা হয়েছে সেটা ২৪ জুন আদালতকে জানাতে হবে। বাকি টাকা কত কিস্তিতে মেটাতে হবে ওইদিনই সেই নির্দেশ দেবে আদালত'। তবে এই নির্দেশ যদি কার্যকর না হয় তাহলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে আদালত। আদালত জানিয়েছে , -' সংস্থার এমডি এবং দুই সিএমডি'র বেতন বন্ধের বিষয়ে ভাববে আদালত'।রাজ্যের দুই বিদ্যুত্ সংস্থা পিডিসিএল এবং এসিডিএসএল-এর কর্মীরা আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলেছিলেন তাদের সংস্থার বিরুদ্ধে। তাদের বক্তব্য, -' বিগত ৩ বছর ধরে তাদের ডিএ বন্ধ হয়েছে। সংস্থা লাভজনক হওয়ায় রাজ্য সরকারের অধীনে হলেও তারা তাদের কর্মীদের নিজেদের আয় থেকেই বেতন দিত'। কিন্তু ডিএ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মীরা আদালতের দ্বারস্থ হয়। তাদের প্রশ্ন, সংস্থা লাভ করলেও তারা কেন তাদের প্রাপ্য ডিএ পাবে না। এই মামলাতেই শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট এই নির্দেশ দিয়েছে। এর আগে ১০ জুনের মধ্যে ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ আগেই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা মানা হয়নি। নির্দেশ মত ডিএ না মেটালে বিদ্যুত্ দফতরের দুই সংস্থার কর্তাদের বেতন বন্ধ করে দেওয়ার কথাও ভাবা হবে বলে জানিয়েছে আদালত।রাজ্যের দুই বিদ্যুত্ সংস্থা পিডিসিএল ও এসিডিএসএলের কর্মীরা সংস্থার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেছিলেন। জানা গেছে, রাজ্যের বিদ্যুত্ দফতর রাজ্য সরকারের অধীন হলেও নিজেদের আয় থেকেই কর্মীদের বেতনের টাকা দেয় ওই সংস্থা। টানা তিন বছর রাজ্য সরকার ডিএ / মহার্ঘ ভাতা বন্ধ করে দিয়েছিল বলে অভিযোগ। এরপরই কর্মীরা আদালতের দ্বারস্থ হয়। তাঁদের দাবি, -' লাভজনক সংস্থা হওয়া সত্ত্বেও কেন তাঁদের প্রাপ্য ডিএ-র টাকা মেটানো হবে না'? এই মামলায় আদালত নির্দেশ দিয়েছিল ১০ জুনের মধ্যে বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে।সময় পেরিয়ে যাওয়ায় এ দিন আদালত অবমাননার মামলা করেন কর্মীরা। এই মামলাতেই বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার নির্দেশ দিয়েছেন, -' আগামী ২৩ জুনের মধ্যে রাজ্যের দুই বিদ্যুত্ সংস্থার প্রায় ২০ হাজার কর্মীর বকেয়া ডিএ- র পাঁচ ভাগের এক ভাগ মিটিয়ে দিতে হবে। বকেয়া মেটানোর পরের দিন অর্থাত্ ২৪ জুন আদালতে এসে জানাতে হবে, নির্দেশ পালন হয়েছে কি না। বাকি টাকা কত কিস্তিতে মেটাতে হবে। ওই দিন নির্দেশ কার্যকর না হলে সংস্থার এমডি ও দুই সিএমডি-র বেতন বন্ধের বিষয়ে ভাববে আদালত'। এ দিন আদালতের নির্দেশে হাজির ছিলেন সংস্থার এমডি শান্তনু বসু ও দুই সিএমডি। সংস্থার তরফে হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও আবেদন করা হয়েছিল। তবে, কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কেই বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট। এরপর আদালত অবমাননা মামলা করেন ওই দুই দপ্তরের কর্মীরা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct