এম. কে. হিমু, মেমারি, আপনজন: চেষ্টা, অধ্যাবসায়, একাগ্রতা থাকলে যেকোনো প্রতিবন্ধকতাকেই যে অনায়াসে জয় করা যায়, তা আরও একবার প্রমাণ করলো পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারির দৃষ্টিহীন কন্যা প্রিয়াস্মিতা ভান্ডারী। মাধ্যমিকে মেমারির দৃষ্টিহীন ছাত্রীর দুর্দান্ত ফল। নাম প্রিয়াস্মিতা ভান্ডারী। প্রিয়াস্মিতা মেমারি রসিকলাল স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী। প্রিয়াস্মিতার স্বপ্ন ভবিষ্যতে প্লেব্যাক সংগীতশিল্পী হওয়ার। তাই সে দৃষ্টিহীন হয়েও পড়াশোনার পাশাপাশি চালিয়ে যেত তার সঙ্গীত চর্চা। জন্ম থেকেই প্রিয়াস্মিতার চোখে দৃষ্টি নেই!!! পারিবারিক সূত্রে জানা যায় ভুল চিকিৎসায় জন্মের পর থেকেই সে দৃষ্টি হারায়।
বাড়িতে বাবা-মা ও তার যমজ দিদি রাজস্মিতা ভান্ডারী। পরিবারের সকলের স্নেহ ভালোবাসা নিয়ে আস্তে আস্তে বেড়ে ওঠা প্রিয়স্মিতার। তবে ছোটবেলা থেকে চোখে দেখতে না পেলেও, স্বপ্ন দেখেছিল সে। বড় হওয়ার স্বপ্ন!! পড়াশোনা করে ভাল রেজাল্ট করার। তাই জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গেই উত্তীর্ণ হতে পেরে যাৎপরনাই খুশি মেমারির রসিকলাল স্মৃতি বালিকা বিদ্যা মন্দিরের ছাত্রী প্রিয়স্মিতা ভান্ডারী। খুশি তার বাবা-মা,খুশি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে গৃহশিক্ষকেরাও। তার প্রাপ্ত নম্বর ৫৬৮, বাংলা প্রথম পত্র, গণিত, ভৌত বিজ্ঞান,ইংরেজি ও ভূগোল সহ পাঁচটা বিষয়ের উপর লেটার মার্কও পেয়েছে সে। মেমারির সারদাপল্লীতে বাড়ি প্রিয়াস্মিতার। বাবা মানস কুমার ভান্ডারী মেমারির প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, মা মহুয়া ভান্ডারী এক অনন্যা গৃহবধূ। অনন্যা বিশেষণটি মহুয়াদেবীর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হলো এই কারণেই যে সংসারের যাবতীয় ঝামেলা সামলেও মহুয়া দেবী সর্বক্ষণ সর্বত্র দুই কন্যার সঙ্গ দিয়েছেন। এমনকী লেখাপড়ার ক্ষেত্রে প্রিয়াস্মিতাকে সহযোগিতা করার জন্য তিনি নিজেও ব্রেইল পদ্ধতি শিখে নেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct