আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে প্রচুর সংখ্যক ভারতীয় কাজ করেন। তাদের অর্জিত অর্থ দেশে পরিবারের কাছে পাঠান। আরব দেশগুলো থেকে যে অর্থ ভারতে আসে তা রীতিমতো চমকে যাওয়ার মতোই। বিদেশি মুদ্রা দেশে নিয়ে আসার এই প্রক্রিয়া বন্ধ হলে দেশের অর্থনৈতিক বিপদ নেমে আসা অসম্ভব নয়। তা আঁচ করে সেব সব থেকে বাঁচতে নূপুর শর্মাদের বহিষ্কার ছাড়া কোনও উপায় ছিল না মোদি-অমিত শাহদের। এ নিয়ে লিখেছেন এস এম শামসুদ্দিন। আজ শেষ কিস্তি।
ভারতে প্রতি মাসে মোট যে বিদেশি টাকার আমদানি হয় তার ৫৩.৫% টাকা পাঠায় আরব দেশগুলি থেকে। বিশ্ব ব্যাংকের দেওয়া তথানুসারে আরব বিশ্বের দেশগুলোতে মোট প্রায় ৭৬ লক্ষ বিদেশের লোক কাজ করে, এরমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে ৩১লক্ষ ও আরবে ২৮ লক্ষ ভারতীয় কাজ করে।এদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ভারতে আমদানি হয় বিদেশি অর্থ, যা ভারতের আর্থিক অবস্থাকে শক্তিশালী করে। এ ছাড়াও ভারত প্রত্যেকদিন ৩০লক্ষ ৯০হাজার ব্যারল তেল ভারতে আমদানি করে। ভারত হচ্ছে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম আমদানি কারক দেশ। ভারতে প্রত্যেকদিন যে পরিমাণ তেল প্রয়োজন হয় তার ৮৪% বিদেশ থেকে আমদানি করে। এর মধ্যে ১৪% আসে আমেরিকা, ১৫%.আসে আফ্রিকা ও ৫২% আসে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি দেশগুলো থেকে। ভারতের ৭৬ লক্ষ মানুষ কাজ করে আরব আমিরশাহিতে। আরব দেশগুলোতে ভারতের প্রায় ৪৪% পণ্য রফতানি হয়। কাতার থেকে মেড ইন ইন্ডিয়া পণ্য সামগ্রী ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
কাতারের পথ অনুসরণ করে আরব আমিরশাহির সমস্ত দেশ ভারতীয় পণ্য বয়কটের পথে হাঁটছে। ফলে একদিকে তেল আমদানির সংকট, ভারতীয় শ্রমিক ও কর্মচারীদের ফেরত পাঠানোর ফলে বিদেশি টাকা আমদানি বন্ধ হওয়ার পথে। তাছাড়াও ভারতীয় পণ্য রফতানি বন্ধের ফলে বিদেশি আরব রিয়াল আসার পথ বন্ধ হওয়ার আশংকা। সব মিলিয়ে ভারত এখন চরম আর্থিক সংকটের সামনে। মোদীজির “ এখন মনকি বাত “শোনার লোক নেই, যে ধর্মীয় উন্মাদনা ও উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের উত্তক্ত করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে বলে সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের মানুষদের এক করে সমর্থন আদায়ের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের কৌশল এখন হঠাৎ স্তব্ধ। আরব দেশগুলোর আর্থিক ও ব্যবসায়িক অবরোধে মোদী ও অমিত জুটির অক্সিজেন শেষ পাংচার যাওয়ার অবস্থা। তাই অবস্থা সামাল দিতে ওই দুই ঘৃণ্য অপরাধী উত্তক্ত কারীদের বহিস্কার করতে বাধ্য হয়েছে বি জে পি কিন্তু বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে যেভাবে সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে প্রতিবাদে শামিল হচ্ছে এবং আরব দেশগুলো যেভাবে এক হয়ে প্রতিবাদ করছে যা ইতিপূর্বে দেখা যায়নি। (সমাপ্ত)
(মতামত লেখকের ব্যক্তিগত) লেখক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও শিক্ষক
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct