আরব ও সংযুক্ত আরব আমির শাহীর মতো মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে প্রচুর সংখ্যক ভারতীয় কাজ করেন। তাদের অর্জিত অর্থ দেশে পরিবারের কাছে পাঠান। আরব দেশগুলো থেকে যে অর্থ ভারতে আসে তা রীতিমতো চমকে যাওয়ার মতোই। বিদেশি মুদ্রা দেশে নিয়ে আসার এই প্রক্রিয়া বন্ধ হলে দেশের অর্থনৈতিক বিপদ নেমে আসা অসম্ভব নয়। তা আছচ করে সেব সব থেকে বাঁচতে নূপুর শর্মাদের বহিষ্কার ছাড়া কোনও উপায় ছিল না মোদি-অমিত শাহদের। এ নিয়ে লিখেছেন এস এম শামসুদ্দিন। আজ প্রথম কিস্তি।
পয়গম্বর হজরত মুহাম্মদ সা. সম্পর্কে বিজেপির মুখপাত্র নূপর শর্মা ও আর এক নেতা নবীন কুমার জিন্দালের কটূক্তি নিয়ে এখন বিশ্বব্যাপী উত্তাল পরিস্থিতি। আরব বিশ্বের দেশগুলোও ঐক্যবদ্ধ। অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক অবরোধের শিকার ভারত। আর্থিক অনটনে এমনিতেই দিশেহারা তার উপর আরব বিশ্বের দেশগুলো একের পর এক অবরোধে মোদী অমিত শাহদের অসহায় অবস্থা। বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের মধ্যে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে।মোদী অমিত শাহরা বোধ হয় তাদের শাসনে আসনে বিশ্বের কাছে এমনভাবে বেইজ্জিত কোনও সময় হতে হয়নি। এর আগে আমরা গুজরাত দাঙ্গা দেখেছে দেশের মানুষ। গো মাংস রাখার অপরাধে হত্যার সংবাদ শুধু সামেন আসেনি এখনও প্রায়ম মোনা যায় সংখ্যালঘু পরিচয়ের কারণে হেনন্ধা কিংবা হত্যার কথা। এটা কিন্তু ভারতীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে খাপ খায় না।
সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে অনেক কল্পিত ও মিথ্যাচার দেশের মানুষের কাছে তাদের সম্পর্কে বিষিয়ে তোলার চেষ্টা হয়েছে। করোনা ছড়াচ্ছে এই অভিযোগে তাবলীগের মার্কাজ নিজামুদ্দিনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তাবলীগ জামাতে আসা কর্মীদের জেলে বন্দি রাখা হয়েছে মাসের পর মাস। যদিও পরে ধেখা যায় দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ায় অপরাধের প্রমাণ না পেয়ে তাদেরকে ছেড়ে দিতে হয়েছে। ফলে, এটা সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণের জন্যই বহু নিরীহ সংখ্যালঘু অত্যাচারিত হচ্ছে তা অস্বীকার করারর উপায় নেই। সেই পরিস্থতিতে আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় আবেগে ঘা দিয়ে ধর্মীয় বিভাজনের এক মহা চক্রান্ত করা হচ্ছে। যদিও মোদি অমিত শাহরা বিজেপির সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণকে ধামাচাপ দিতে তড়িঘিড়ি নূপর শর্মা ও নবীন কুমারকে বহিষ্কার করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, মোদী অমিত শাহরা তাদের অত্যন্ত বিশ্বস্ত নুপুর শর্মা ও নবীন কুমারকে বহিষ্কার করতে বাধ্য হলেন কেন। হঠাৎ কী এমন ঘটল এমন উল্টো পুরান ? মোদী অমিতদের কী অনুশোচনা জেগেছে, অপরাধ বোধের চেতনা ফিরেছে?
ভাবনার বিষয় তো বটেই। নুপুর শর্মা ও নবীন কুমারদের টিভিতে আলোচনা এক চক্রে প্ৰিয় নবী সা.এর বিবাহ সম্পর্কে অত্যন্ত কুরুচিকর ঘৃণ্য বক্তব্যের আরবি ভাষায় অনুবাদ করে ফেসবুক ও টুইটারে পোস্ট করে কোনও এক ভারতীয়। আর একে কেন্দ্র করে ওমানের প্ৰখ্যাত ব্যবসায়ী আলী হাসান তাঁর অধীনে কর্মরত সমস্ত ভারতীয় কর্মচারীদের মাহিনা পরিশোধ করে ভারতের বিমান টিকিট কেটে বিদায় জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন এটা আমার ইমানী কর্তব্য। তার এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়ে ক্রমশ আরব বিশ্বের কর্মরত ভারতীয়দের দেশে পাঠাবার ব্যবস্থা করেছে আরব সংযুক্ত আরব আমির শাহীর দেশগুলো। ওমানের প্রধান মুফতী এ প্রসঙ্গে ফতোয়া জারি করেছে। আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সমস্ত মুসলিম দেশগুলো এখন সমস্ত ভারতীয় দের বহিষ্কারের প্রক্রিয়া জারি রেখেছে। আরব ও সংযুক্ত আরব আমির শাহীর মতো মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে প্রচুর সংখ্যক ভারতীয় কাজ করেন। তাদের অর্জিত অর্থ দেশে পরিবারের কাছে পাঠান। আরব দেশগুলো থেকে আমাদের দেশে যে অর্থ আসে রীতিমতো তা চমকে দেওয়ার মতোই। কেন্দ্রীয় সরকারের এক তথ্যে দেখা যায় আরব আমির শাহী থেকে ২৬.৯%,আমেরিকা ২৩%, সৌদি আরব ১১%, কাতার ৬.৫% কুয়েত ৫.৫%, ওমান ৩.৩%,ব্রিটেন ৩%, আর কানাডা ১% অর্থ ভারতে আসে।
(মতামত লেখকের ব্যক্তিগত) লেখক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও শিক্ষক
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct