নিজস্ব প্রতিবেদক, মালদা, আপনজন: উচ্চমাধ্যমিকে ফের নজর কাড়ল ছাত্রী। মোহাম্মদিয়া হাই মাদ্রাসা থেকে নাম রেজিস্ট্রেশন ও পরীক্ষা দিয়েছিল। কালিয়াচক কোয়ান্টাম গার্লস মিশনের থেকে পড়াশোনা করত সাবিনা ইয়াসমিন। আর সাবিনার ফলাফলে নজর কেড়েছে। অল্পের জন্য সম্ভাব্য দশম মেধা তালিকায় নাম তুলতে না পারায় আপসোস রয়েছে সাবিনার, মা ও মিশন কর্তৃপক্ষের। সম্ভাব্য ১৩ তম স্থান অধিকার করে নজর কাড়েছে ভিন রাজ্যে ফেরিওয়ালার মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন। কোয়ান্টাম গার্লস মিশনের ফলাফলে খুশি কর্তৃপক্ষ। সাবিনার বাড়ি কালিয়াচকের নওয়াদা যদুপুর মন্ডলপাড়ায়। সাবিনা ইয়াসমিন রেজাল্টের মাধ্যমে কালিয়াচকের সুনাম বৃদ্ধি করেছে। প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৬ । বাংলা ৯৭, ইংরেজী ৯৯, পদার্থ বিজ্ঞান ৯৫ , রসায়ন ১০০, জীবন বিজ্ঞান ৯৫, অংক ৯২। মাত্র তিন নম্বর কম এর জন্য সেরা ১০ থেকে ছিটকে যায় তবুও সার্বিক ফলাফল মোটের ওপর ভালোই হয়েছে। আপসোস তো আছে। মা রহিমা বিবি বলেন, আমার চার মেয়ে। বড় মেয়ে সামিমা আখতার বিএসসি নার্সিং পাঠরত নর্থ বেঙ্গল মেডিক্যাল কলেজে তৃতীয় বর্ষ। সাবিনা মেজো, রিফাজ জাহান অষ্টম শ্রেনীতে ও ছোট মেয়ে নূরজাহান চতুর্থ শ্রেনীতে পড়ে। আমার মেয়েরা পড়াশোনায় আগ্রহী। অভাব ও কষ্ট করেও লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই । এই মিশনে ভর্তি হয় সাবিনা । মেয়েদের একমাত্র একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রীদের সায়েন্স পড়ানো হয় বলেই এই মিশনে ভর্তি করেছিলাম। ছেলেদের জন্য মিশন থাকলেও শুধুমাত্র একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী ছাত্রীদের এই মিশন যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে। ফল ও মিলছে। সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে পড়াশোনা করে সেদিকে নজর দেওয়াই লক্ষ্য তাদের।
এবার ৭৮ জন ছাত্রী পরীক্ষা দিয়েছিল। সাবিনা ইয়াসমিন গরীব পরিবার । বাবা সাইদুল ইসলাম ভিন রাজ্যে উত্তরপ্রদেশে মূলত প্লাস্টিক সামগ্রী ফেরি করেন। মা রহিমা বিবি গৃহবধূ বিড়ি বাঁধেন। এদিনের ফলাফল ঘোষণার পর খুশিতে মাতোয়ারা মিশনের ছাত্রীরা। কোয়ান্টাম মিশন চত্বরে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মিষ্টান্ন, পুষ্পস্তবক, পুস্তক স্মারক উপহারে সংবর্ধিত করেন কৃতী সাবিনাকে। উপস্থিত কালিয়াচক থানার এসআই মৌসুমী রায় মল্লিক, শিক্ষারত্ন শিক্ষিকা তানিয়া রহমত মিশনের প্রধান শিক্ষক মাসিউর রহমান, মুখ্য পৃষ্ঠপোষক সেরাজুল ইসলাম, আব্দুস সালাম প্রমুখ।কৃতী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, আমার আন্তরিক ইচ্ছা গাইনো চিকিৎসক হতে চাই । আমার এই ফলাফলের পেছনে শিক্ষকদের অবদান রয়েছে যথেষ্ট। মাধ্যমিকে নম্বর ছিল ৬৪৮। তারা ও গরীব হলেও শিক্ষকরা সহযোগিতার করেন । ভবিষ্যতে যাতে সরকার পাশে থাকে তাহলে উচ্চ শিক্ষায় এগিয়ে যেতে পারব । কোয়ান্টাম মিশনের পৃষ্ঠপোষক সেরাজুল ইসলাম বলেন, শিক্ষায় জাতির মেরুদন্ড। মেয়েরা শিক্ষিত হলে সমাজ উন্নতি লাভ করবে। শুধুমাত্র ছাত্রীদের মধ্যে সায়েন্স আগ্রহ ও পড়াশোনার জন্য ২০১৫ সালে একাদশ ও দ্বাদশ শুধু ছাত্রীদের জন্য সায়েন্স বিভাগ চালু হয়। এখান থেকে পড়াশোনার ফলে সাবিনা ইয়াসমিন উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে। মোট ৭৮ জন ছাত্রী উচ্চমাধ্যমিক দেয় এবার। ৯৫ শতাংশ ওপর ২০ জন পেয়েছে। সকলেই উত্তীর্ণ। বিশিষ্টজনের উপস্থিতিতে আমরা সংবর্ধিত করতে পেরে খুশি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct