আপনজন ডেস্ক: উত্তরবঙ্গের চা বাগানের শ্রমিকদের দৈনিক মজুরিতে ১৫ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন বৃদ্ধি করার কথা বুধবার অালিপুরদুয়ারে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেতন সংশোধনের জন্য বিক্ষোভ চলার মাঝে এই ঘোষণা। রাজ্য শ্রম বিভাগ সংশোধিত মজুরির বিষয়ে ঐকমত্য আনতে প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং ইউনিয়নগুলির মধ্যে বেশ কয়েক দফা আলোচনা হয়। শ্রমিকরা এখন পর্যন্ত দৈনিক ২০২ টাকা মজুরি পান। প্ল্যান্টাররা ২০ টাকা মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব দিলেও ইউনিয়নগুলো চেয়েছিল বেতন বাড়িয়ে ২৪০ টাকা করা হোক। কিন্তু মমতার ঘোষণা বাস্তবায়িত হলে মজুরি বেড়ে দাঁড়াবে ২৩২ টাকা।
অন্তর্বর্তীকালীন মজুরি বৃদ্ধি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ১১ বছর আগে আমরা ক্ষমতায় আসার আগে চা বাগানের শ্রমিকরা দিনে ৬৭ টাকা করে পেতেন। আমরা তা বাড়িয়ে ২০২ টাকা করেছি। এটি আরও বাড়ানো হবে কারণ ১৫ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন বৃদ্ধি হবে। বুধবার আলিপুরদুয়ার জেলায় আদিবাসী দম্পতিদের একটি গণবন্টন কর্মসূচি ও গণবিবাহে যোগ দেওয়ার সময় মমতা এই মজুরি বৃদ্ধির কথা বলেন। কালচিনি ব্লকের সুভাষিণী চা বাগানে এই অনুষ্ঠান হয়। গত বছরের জানুয়ারিতে চায়ের খাতে শ্রমিকদের মজুরি এবং কর্মী ও উপ-কর্মচারীদের বেতন ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কালিম্পংয়ে একটি আদিবাসী ভবন নির্মাণ করে আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। চা–শ্রমিকদের জন্য চা–বাগান এলাকায় ‘চা সুন্দরী ঘর’ নির্মাণ করা হবে। পর্যটকদের থাকার জন্য নির্মাণ করে দেওয়া হবে ‘হোম স্টে ভবন’। উত্তরবঙ্গের চায়ের খাতে প্রায় তিন লক্ষ শ্রমিক রয়েছে, যাদের মূল দাবি ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা। রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা ন্যূনতম মজুরি নিয়ে ২০১৫ সাল থেকে চা খাতের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করছেন। এদিন সকালে আদিবাসীদের গণবিবাহ অনুষ্ঠানে যোগ দেন মমতা। সেখানে স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের ৫০৬ জোড়া দম্পতির গণবিবাহ হয়। এ সময় আদিবাসীদের সঙ্গে ধামসা-মাদলের তালে তালে নাচেন তিনি। আদিবাসী দম্পতিদের বিয়ের আয়োজন করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। সেখানে আদিবাসীদের বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের নারী–পুরুষের মধ্যে সম্পন্ন হয় এই গণবিবাহ অনুষ্ঠান। এদিন মমতা পরেছিলেন আদিবাসীদের পছন্দের সাদার ওপর সবুজ রঙের চেক শাড়ি। এ সময় মমতা বলেন, বাংলার সরকার আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তাঁদের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। আজ রাজ্য সরকারের রূপশ্রী ও কন্যাশ্রীসহ অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থও তুলে দেন এলাকার মানুষের হাতে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct