এহসানুল হক, বসিরহাট, আপনজন: বনজঙ্গলে ভরা শ্মশান, মাঠের পর মাঠ পাড়ি দিয়ে মরদেহ শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে যেত এলাকার মানুষ। তারপর ২০০৮ সালে ওই এলাকায় প্রধান অপরেশ মুখার্জির অক্লান্ত পরিশ্রমে শ্মশান ও কালী মন্দিরের কাজ শুরু হয়। কিন্তু শ্মশানে যাওয়ার কোন রাস্তা ছিল না খোরপোতার মতুরাপুর গ্রামে। যার ফলে শ্মশান তৈরি করেও কোনও কাজে আসছিল না এলাকার মানুষের। ওই শ্মশানে মৃতদেহ নিয়ে দাহ করতে যেতে সমস্যা তৈরি হয়। অবশেষে কয়েকজন মুসলিম শ্মশান ও কালী মন্দিরে যাওয়ার জন্য জমি দান করেন। ফলে রাস্তার সমস্যা মিটেছে। সেই জমিতে এখন মন্দির শ্মশান উদ্বোধন হয়েছে নয় বছর পরে। এলাকার মানুষেরা আরো বলেন, খোলাপোতা থেকে বসিরহাট কয়েক কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে মরদেহ নিয়ে শেষকৃত সম্পন্ন করতে হত। না হলে মাটির নিচে পুঁতে দেওয়া হতো। এলাকার মানুষের সহযোগিতায় বিশেষ করে মুসলিম ভাইদের সাহায্যের নতুন শ্মশানে মরদেহ শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। এদিন খোলাপোতা পঞ্চায়েত প্রধান অপরেশ মুখার্জি বলেন, খোলাপোতা পঞ্চায়েতের উদ্যোগে এই শ্মশানের কাজ অনেক এগিয়েছে। পঞ্চায়েতে তরফ থেকে বসার জায়গা করে দেওয়া হয়েছে। আছে পানীয় জলের ব্যবস্থা। পাশাপাশি শৌচালয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। এই শ্মশানে তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো, চারো মিটার দূরে অবস্থিত শ্মশান মন্দির। পাঁচ জন মুসলিম ভাইদের দেওয়া জমির উপর দিয়ে এই রাস্তা তৈরি হয়েছে। এদিন প্রকাশ রায় মন্দির কমিটির সদস্য, তিনি বলেন পাঁচ জন মুসলিম ভাই যদি তারা এই রাস্তা দান না করতেন তাহলে এই মন্দিরও শ্মশানে মরদেহ নিয়ে যেতে পারতাম না। এটা সম্প্রীতির এক অনন্য নজির ।
এই শ্মশান উদ্বোধন এ উপস্থিত ছিলেন বসিরহাট সাংসদ নুসরাত জাহান, বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতিসহ সরোজ ব্যানার্জি, বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক সপ্তর্ষী ব্যানার্জি সহ একাধিক বিশিষ্টজনে। এদিন জমিদাতা বাকিবিল্লাহ ইসলাম বলেন, আমরা একে অপরের পরিপূরক, বাংলায় এই সম্প্রীতির নিদর্শন রয়েছে। শ্মশান ও কালীমন্দিরের জন্য আমরা পথ দান করেছি। আমরা এখানে মিলেমিশে সবাই বসবাস করি নেই কোন আমাদের মধ্যে দলাদলি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct