আপনজন ডেস্ক: দেওবন্দে চলমান জমিয়ত সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে মুসল্লিদের ধৈর্য ও সাহসিকতার আহ্বান জানান মাহমুদ আসাদ মাদানি। তিনি বলেন, ‘তারা যদি সততার কথা বলে, তাহলে সেটা ধর্ম, আমরা যদি এটা নিয়ে কথা বলি, সেটাকে কটূক্তি বলে মনে করা হয়। আমরা আপনাকে বলার চেষ্টা করছি, ভয় দেখানোর জন্য নয়। আপনি ভয় পান এবং আমরা শুধু বলছি. ভয় পাওয়া বন্ধ করুন আপনার প্রিয়জনদের পাশাপাশি যাদের আপনি অস্তিত্বহীন বলে মনে করেন তাদের ভয় দেখানো বন্ধ করুন। মাদানি বলেন, আমরা অস্তিত্বহীন নই। এই দেশে শহর আছে। এ দেশ আমাদের। ভালো করে বুঝুন... এটা আমাদের দেশ। আমরা পাকিস্তানে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি, যা আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। মাদানি বলেন, এই দেওবন্দে স্কাউটস এবং গাইডদের সহায়তায় একটি কেন্দ্র তৈরি করতে চাই, যাকে সন্ত্রাসের আস্তানা হিসাবে প্রচারণা করা হচ্ছে।
৬ দিন আগে হাপুরে জমিয়তের তৈরি ভবন বিনা নোটিশে সিল করে দেওয়া হয়। আমরা বলতে চাই এত কষ্টের পরও আমরা নীরব। আমরা গত ১০ বছর ধরে ধৈর্য ধরে আছি। তবুও, আমাদের চিন্তা করার দরকার নেই। মাদানি সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চান। এদিনের সম্মেলনে জমিয়তের দুই গোষ্ঠীর মিশে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে। জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই দেওবন্দের জাতীয় সম্মেলনে পৌঁছে যান আরশাদ মাদানি। শনিবার তার এখানে আসার কথা ছিল না। মাহমুদ মাদানি তার চেয়ার থেকে উঠে গাড়িতে তাকে রিসিভ করতে গেলেন। তারপর তাকে মঞ্চে এনে বসিয়ে দেন। এখন উভয় জমিয়তের বিরোধের অবসান ঘটতে পারে বলে বলা হচ্ছে। এদিনের সম্মেলনে মাওলানা নোমানী শাহজাহানপুরী বলেন, মুসলিমরা তাদের ধর্মীয় আইনের পরিবর্তন মেনে নেবে না। সরকার মুসলিম পার্সোনাল ল বাতিল করতে একটি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আনতে চায়, যা বরদাস্ত করা হবে না। বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদের মত বিষয়গুলি একটি ধর্মীয় অঙ্গ। দেশের প্রতিটি শহরের স্বাধীনতার অধিকার রয়েছে। মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় আইনের কোনো পরিবর্তন মেনে নেবে না। সরকার এটা করলে আমরা সব ধরনের প্রতিবাদ করতে বাধ্য হব।
বারাণসী থেকে আগত হাফিজ উবায়দুল্লা বলেন,বর্তমানে বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ, মথুরার শাহী ইদগাহ এবং দিগার মসজিদের বিরুদ্ধে এই ধরনের প্রচারণা চলছে, যা দেশের শান্তি ও সম্প্রীতি নষ্ট করেছে। এদিন জমিয়তের ১৩ কোটির বাজেট পাস হয়। সম্মেলনের শুরুতে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের ২০২২-২৩ অধিবেশনের বাজেট পেশ করা হয়। এবারের অধিবেশনের বাজেট রাখা হয়েছে ১৩ কোটি ৩৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এতে দীনি শিক্ষা ও বৃত্তি বাবদ এক কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। জমিয়ত তহবিল রিলিফের জন্য দেড় কোটি টাকা রাখা হয়েছে। গত মৌসুমে প্রায় ৮ কোটি টাকার বাজেট ছিল, যা এবার বেড়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। জমিয়তের জাতীয় সম্মেলনে এই বাজেট প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
তবে জমিয়তের জন্য সুখবর ফের দুই নেই এক হতে চলেছেন। জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের জাতীয় সম্মেলনে এক মঞ্চে হাজির মাওলানা মাহমুদ মাদানী ও আরশাদ মাদানি, দুজনেই এক হলেন। দুজনেই নিজেদের মধ্যে চাচা-ভাতিজা। চেয়ার নিয়ে বিভক্তির পর দুজনেই নিজ নিজ জমিয়তের সভাপতি হয়েছেন। অনেকদিন পর দুই জমিয়ত প্রধানের মঞ্চে দেখা গেল। দুজনেই দিয়েছেন সংহতির বার্তা। আরশাদ মাদানী মঞ্চ থেকে বলেন, সেই দিন বেশি দূরে নয় যেদিন উভয় জমিয়ত ঐক্যবদ্ধ হবে, কারণ উভয় জমিয়তের উদ্দেশ্য এক।
দেওবন্দের শাহী ইদগাহ মাঠে চলমান জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের জাতীয় কনভেনশনে মাওলানা মাহমুদ মাদানি এবং আরশাদ মাদানি এক মঞ্চে হাজির হন। দুজনেই নিজেদের মধ্যে চাচা-ভাতিজা। চেয়ার নিয়ে বিভক্তির পর দুজনেই নিজ নিজ জমিয়তের সভাপতি হয়েছেন। অনেকদিন পর দুই জমিয়ত প্রধানের মঞ্চে দেখা গেল। দুজনেই দিয়েছেন সংহতির বার্তা। আরশাদ মাদানী মঞ্চ থেকে বলেন, সেই দিন বেশি দূরে নয় যেদিন উভয় জমিয়ত ঐক্যবদ্ধ হবে, কারণ উভয় জমিয়তের উদ্দেশ্য এক।
২০০৮সালে জমিয়তের পদ নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল।জমিয়ত উলামায়-ই-হিন্দের জাতীয় সভাপতি ছিলেন মাওলানা আসাদ মাদানি যিনি মাওলানা মাহমুদ মাদানির পিতা। তিনি ২০০৮ সালে মারা যান। এরপর জমিয়তের নেতৃত্ব নিয়ে মাহমুদ মাদানির চাচা মাওলানা আরশাদ মাদানির সঙ্গে বিরোধ হয়। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর জমিয়ত দুই ভাগে বিভক্ত হয়। একটি উপদলের নেতৃত্বে আছেন মাহমুদ মাদানি এবং অন্য দলটির নেতৃত্বে আছেন আরশাদ মাদানি। দুজনেই নিজ নিজ জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের জাতীয় সভাপতি। বর্তমানে মাহমুদ মাদানির আহ্বানে দেওবন্দে এই জাতীয় সম্মেলন ডাকা হয়েছে।
চাচা আরশাদ মাদানি বক্তব্য দেন, ভাতিজা চুপচাপ শোনেন। গত দুই বছর ধরে চাচা-ভাতিজার মধ্যে এই দ্বন্দ্ব কমেছে। উভয় জমিয়ত প্রধান একে অপরের কর্মসূচিতে যোগ দিতে শুরু করেছেন। মাহমুদ মাদানি তার বৃদ্ধ চাচা আরশাদ মাদানি যেদিন বিবৃতি দেন,শ্রদ্ধাবশত সেদিন মাহমুদ মাদানি সে বিষয়ে কিছু বলেন না, যাতে বিতর্ক না হয়। জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই দেওবন্দের জাতীয় সম্মেলনে পৌঁছে যান আরশাদ মাদানি। শনিবার তার এখানে আসার কথা ছিল না। মাহমুদ মাদানি তার চেয়ার থেকে উঠে গাড়িতে তাকে রিসিভ করতে গেলেন। তারপর তাকে মঞ্চে এনে বসিয়ে দেন। এখন উভয় জমিয়তের বিরোধের অবসান ঘটতে পারে বলে বলা হচ্ছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct