তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ শরীরে জলশূণ্যতা দূর করতে সাহায্য করে এবং সেইসঙ্গে শরীরের জলের অভাব দূর করে। তাল শাঁসে রয়েছে ভিটামিন সি ও বি কমপ্লেক্স যা শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারি। তালে শাঁসে রয়েছে ভিটামিন এ, যা দৃষ্টিশক্তিকে প্রখর করতে সাহায্য করে। তালের শাঁসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। অনেক সময় অ্যাসিডিটির ফলে বমিভাব হয় এবং খাবার বিস্বাদ লাগে। এ নিয়ে লিখেছেন নরসিংহ দাস।
তালগাছ একপায়ে দাঁড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে, উঁকি মারে আকাশে...’ কবিগুরুর লেখা ‘তালগাছ’ কবিতার লাইনে তালগাছের এহেন বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ রয়েছে। তালগাছ যেমন এক পায়ে দাঁড়িয়ে, তেমনি সব গাছ ছাড়িয়ে তালগাছ অধিক গুণাবলী সম্পন্ন। বিশেষত তালগাছের ফল অধিক পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। এটি এশিয়া ও আফ্রিকার গ্রীষ্মকালীন গাছ। এই গাছের ফলকেও তাল বলা হয়। এরা এরিকাসি পরিবারের বরাসুস গণের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। গাছটির আদি বাসস্থান মধ্য আফ্রিকা। তালের ফল এবং বীজ দুইই বাঙালির খাদ্য। তবে গ্রীষ্মকালে তালের বীজ যা ‘তালশাঁস নামে পরিচিত, তা অধিক পুষ্টি গুণে সমৃদ্ধ। তালে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ও সি। এছাড়াও জিংক, পটাশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম সহ আরও অনেক খনিজ উপাদান রয়েছে। এর সাথে আরো রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও এ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান। গ্রীষ্মকালে বাজারে কচি তালের শাঁস খুবই চোখে পড়ে। এই তালের শাঁসেই রয়েছে এমন কিছু পুষ্টিগুণ, যা শরীরের পক্ষে খুবই উপকারি। তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ শরীরে জলশূণ্যতা দূর করতে সাহায্য করে এবং সেইসঙ্গে শরীরের জলের অভাব দূর করে। তালে শাঁসে রয়েছে ভিটামিন সি ও বি কমপ্লেক্স যা শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারি। তালে শাঁসে রয়েছে ভিটামিন এ, যা দৃষ্টিশক্তিকে প্রখর করতে সাহায্য করে।
তালের শাঁসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। অনেক সময় অ্যাসিডিটির ফলে বমিভাব হয় এবং খাবার বিস্বাদ লাগে। কচি তালের শাঁস এই বমিভাব দূর করতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে খাবারে অরুচিভাব কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। কচি তালের শাঁস লিভারের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা দূর করতে সাহায্য করে কচি তালের শাঁস। তালের শাঁসে থাকা ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ত্বককে সুন্দর, উজ্জ্বল ও দীপ্তিময় করে তুলতে সাহায্য করে এই তালের শাঁস। ঋতুভিত্তিক যে কোনো ফলেরই বিশেষ বিশেষ পুষ্টিগুণ রয়েছে। গ্রীষ্মকালীন ফল এই কচি তালশাঁসও তার মধ্যে পড়ে। প্রখর গ্রীষ্মে হাটে বাজারে তালশাঁস কিনতে পাওয়া যায়। সাধারণত বিক্রেতাগণ তালগাছ থেকে কচি তাল, ডালসহ কেটে বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে আসেন। বাজারে বসেই কাটারি দিয়ে তালের খোসা খুবই সন্তর্পনে ছাড়িয়ে ভেতরে থাকা কচি তাল শাঁস বের করে তা বিক্রি করেন। বর্তমানে একটি কচি তালশাঁসের মূল্য পাঁচ টাকা। গ্রীষ্মকালীন এই ফল একদিকে যেমন পুষ্টিগুণে ভরপুর, অন্যদিকে এই ফল বিক্রি করে বহু মানুষের জীবিকা নির্বাহ হয়।
লেখক: ভূগোল বিষয়ক শিক্ষক, এলাহিয়া হাই মাদ্রাসা (উঃ মাঃ),পশ্চিম মেদিনীপুর।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct