রাকিবুল আলম,কলকাতা,আপনজন: কলকাতার একমাত্র সরকারি দাঁতের হাসপাতাল ড. আর আহমেদ ডেন্টাল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল-এ চিকিৎসা করাতে এসে চরম সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে রোগীরা, এই অভিযোগ সামনে আসতে মুরু করেছে। কলকাতা কেন্দ্রিক দাঁতের একমাত্র এই সরকারি হাসপাতালটিতে প্রায় প্রতিদিন প্রচুর রোগীর ভিড় হচ্ছে। আর এই ভিড় সামাল দিতে রীতিমতো ব্যর্থ কলকাতার সর্ববৃহৎ সরকারি হাসপাতালটি। আর তাই অনেক রোগী সরকারি হাসপাতালটিতে তাদের দাঁতের চিকিৎসা করাতে এসে ফিরে যাচ্ছেন বা আবার কেউ অন্যত্র চিকিৎসা করাতে বাধ্য হচ্ছেন।
রোগীরা অভিযোগ করছেন, তাদের দাঁত তোলার প্রয়োজন এখন হলেও তারা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গেলে ডাক্তাররা তাদেরকে দাঁতের ব্যথার ওষুধ দিচ্ছেন এবং দাঁত তোলার তারিখ আসা পর্যন্ত সেই ওষুধ খেয়ে যেতে বলছেন। প্রেসক্রিপশনে ডাক্তার দাঁত তোলার কথা লিখে দিলেও হাসপাতাল থেকে দাঁত তোলার জন্য অনেক রোগীকেই তিন থেকে চার মাস পরে তারিখ দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে যিনি দাঁত তোলার তারিখ দিচ্ছেন তিনি বলছেন, রোগীর সংখ্যা প্রচুর হওয়ায় এতদিন পরে দাঁত তোলার তারিখ দেওয়া হচ্ছে। গোটা রাজ্যে সুপ্রতিষ্ঠিত সরকারি তিনটি দাঁতের হাসপাতাল রয়েছে। এগুলি হল বর্ধমানের ‘বর্ধমান ডেন্টাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল, শিলিগুড়ির নর্থ বেঙ্গল ডেন্টাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল এবং কলকাতার ড. আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল। তবে রাজ্যের রাজধানী কলকাতা কেন্দ্রিক হওয়ায় ড. আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল-এ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর মানুষ আসেন তাদের দাঁতের চিকিৎসা করানোর জন্য। সরকারি এই দাঁতের হাসপাতালে বিনা খরচে চিকিৎসা করা হয়। যা হাসপাতালটিতে প্রচুর ভিড় হওয়ার অন্যতম কারণ। এই প্রচুর ভিড় সামাল দেওয়ার মতো যথেষ্ট পরিকাঠামো হাসপাতালটিতে নেই। আর তাই অনেক রোগী এই হাসপাতালে দাঁতের চিকিৎসা করাতে এসে সমস্যায় পড়ছেন।
অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালটিতে প্রচুর রোগীর ভিড় হলেও তা সামাল দেওয়ার মতো উপযুক্ত পরিকাঠামোর কোন ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। হাসপাতালে দাঁত তোলা রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় প্রতিদিন দাঁত তোলার জন্য একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক রোগীর তালিকা তৈরি করা হয় এবং সেইদিনে পরে আসা রোগীদের ক্রমানুযায়ী দাঁত তোলার জন্য পরের দিন গুলিতে আসতে বলা হচ্ছে। ফলে বর্তমানে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীদের এখনই দাঁত তোলার প্রয়োজন হলেও এবং দাঁতে যন্ত্রণা থাকলেও তাদের অনেকেই দাঁত তোলার জন্য তিন থেকে চার মাস পরে আসতে বলা হচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা এক মহিলার অভিযোগ, তিনি গরীব মানুষ তাই হাসপাতালটিতে বিনা খরচে চিকিৎসা হয় শুনে এসেছিলেন। কিন্তু ডাক্তার প্রেসক্রিপশনে দাঁত তোলার কথা লিখে দিলেও, আর দাঁতে যন্ত্রণা থাকা সত্ত্বেও তাকে দাঁত তোলার জন্য তিন মাস পরে আসতে বলা হয়েছে। আর তাই তিনি তার চিকিৎসা অন্যত্র করাবেন। সুন্দরবন থেকে দাঁতের চিকিৎসা করাতে আসা রাকিবের অভিযোগ, তিনি হাসপাতালটিতে দাঁতের চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন। ডাক্তার প্রেসক্রিপশনে দাঁত তোলার কথা লিখে দিলেও হাসপাতাল থেকে তাকে সাড়ে তিন মাস পরে আসতে বলা হয়েছে। এত দেরি করে দাঁত তোলার তারিখ দেওয়ার কারণ হিসাবে হাসপাতাল থেকে দাঁত তোলার ডাক্তার সংখ্যা কম এবং উপযুক্ত পরিকাঠামোগত অভাবের কথা বলা হচ্ছে। হাসপাতালটিতে কাজ করা কয়েকজনের কথায়, দীর্ঘদিন ধরেই হাসপাতালটিতে এই সমস্যা থাকলেও তা সমাধান করার কোন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct