সজিবুল ইসলাম,ডোমকল,আপনজন: দেশ যখন ডিজিটাল হচ্ছে তখন আদিম যুগের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এমনি ঘটনা দেখা গেলো ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত জলঙ্গি ব্লকের সাগর পাড়া অঞ্চলের সীমান্তে।আদিম যুগের মত নদীর জল কমে চর পড়ে যাওয়ায় সেই চরের বালি খুঁড়ে ছোটো ছোটো গর্ত করে সেই গর্তের জমা জল পান করতে দেখা গেল । স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে তীব্র পানীয় জলের সমস্যায় ভুগছে জলঙ্গী বিধানসভার সাগরপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সীমান্তবর্তী সূর্যনগর কলোনি এবং উদয়নগর কলোনির বাসিন্দারা। পাড়ার নলকূপের জল আর্সেনিকযুক্ত হওয়াই পানের অযোগ্য। তাছাড়া পাড়ায় যেকটা পানীয় জলের কল রয়েছে সেগুলো পর্যাপ্ত নয়। সেই কারনে বাধ্য হয়ে পদ্মা নদীর মধ্যে ছোট ছোট গর্ত খুঁড়ে সেই গর্তের জমা জলই ভরসা গ্রামবাসীদের। কলোনির শুরু থেকেই এই সমস্যায় ভুগছে সূর্য্যনগর কলোনী এবং উদয়নগর কলোনির বাসিন্দারা। চড়া রোদে দীর্ঘ সময় ধরে জল সংগ্রহ করতে হয় স্থানীয় মহিলা থেকে পুরুষদের। স্থানীয় কমলা রানী বিশ্বাস বলেন বর্ষার সময় নদীর জলই খেতে হয় তাদের। অনেককেই আবার জল কিনে খেতে হয়। এর ফলে চরম সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে স্থানীয় এলাকাবাসীদের। এই অবস্থায় সরকারি জলের দাবি জানিয়েছে লক্ষ্মী রানী বিশ্বাস সহ গ্রামের আরো অনেক মহিলা।তাদের বক্তব্য যে কলোনি শুরু থেকেই এই ভাবেই জল জমিয়ে রান্না থেকে শুরু করে খাওয়া পর্যন্ত করতে হয় এই চরের বালি সরিয়ে গর্ত করে যে জল সংগ্রহ করা হয়।
সীমান্তের গৃহ বধূ শেফালী রায় বলেন চৈত্র বৈশাখ মাস গুলো টিবাইলের জল উঠে না বললেই চলে ,তখন বাধ্য হয়ে আমাদের মত অসহায় পরিবারের মানুষ পদ্মা নদীর চরে ছোটো ছোটো গর্ত করে জল সংগ্রহ করে সেই জল দিয়ে রান্না সহ খাওয়ার জন্য ব্যবহার করি।আর যদি অর্থ আছে তারা ডামের জল কিনে খায়।আর কিনা জল দিয়ে সংসারের সমস্ত কাজ করা যায়না।অনেক জলের প্রয়োজন হয়।আর সরকারি ভাবে কোনো সোজলধারার ব্যবস্থা বা অন্য কোনো ভাবে বিশুদ্ধ পানিও জলের ব্যবস্থা সরকারি ভাবে করলে খুব উপকৃত হব বলে জানান । আরো এক মহিলা জানান যে জল নিতে সকাল ও সন্ধার সময় অনেক ভিড় হয় তখন লাইন দিয়ে জল সংগ্রহ করতে হয়।সেটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার ।এক কলসি জল ভরতে অনেক সময় দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগে।একটু একটু করে জল জমে আর সেই জল ছোট পাত্রের মাধ্যমে কলসি বা ডামে ভর্তি করে ঘরে নিয়ে যায়।আর বর্ষার সময় নদীর জল দুই তিনদিন ঘরে রেখে সেই জল দিয়ে সব কাজ করতে হয়।কারণ বর্ষার সময় জলে অনেক নোংরা থাকার জন্য জলটাকে রেখে দিলে নোংরা টা বসে যায়।তার পরে সেই জল রান্নার উপযোগী হয় । এই ঘটনায় সাগর পাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান আমজাদ আলী খান বলেন চরের জল সংগ্রহ করে কিন্তু সেটা খাওয়ার জন্য না।ওই জল দিয়ে ভাত রান্না সহ তরকারি তে বেশি ব্যবহার করেন ।তাতে রান্নাটা ভালো হয় আর ওই এলাকায় পানিও জলের কোনো সমস্যা নেই।টেপ কলের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে,এবং দুটো সজলধারার কাজ নেওয়া হয়েছে সেটা খুব তারাতারি ওই দুই গ্রামে বসানো হবে।এবং গ্রামে সরকারি অনেক হাত পাম্প আছে ।যেটুকু সমস্যা আছে সে সমস্যার খুব তারাতারি সমাধান হয়ে যাবে বলে আশাবাদী প্রধান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct