সজিবুল ইসলাম,ডোমকল,আপনজন: সংসারের হাল ধরতে পড়া ছেড়ে কৃষিকাজে যুক্ত মৌসুমীর, দিশা দেখাচ্ছেন অন্যান্য কৃষকদের। এমনি এক মহিলা চাষীর কথা হয়তো অনেকেই অজানা। আজ থেকে প্রায় ছাব্বিশ বছর আগে মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদ থানার মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দা মৌসুমী বিশ্বাস তখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্রী। পড়াশোনা ঠিকই চলছিল হঠাৎই একটা দুঃসংবাদ এসে জীবনের স্বপ্ন সব নিমেষে শেষ করে দিয়ে চলে গেলো। বাড়ি থেকে সংবাদ, দুর্ঘটনায় মারা গেছে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী বড় দাদা।তখন পরিবারে মা, বোন,ছোট ভাই সহ দাদার ছেলে ও স্ত্রী।বাড়ি ফিরে দিশে হারা হয়ে পড়ে। নিজের পড়াশোনা তো দূরের কথা একবেলা খাবারের ব্যবস্থা কি ভাবে হবে পরিবারের।সেই সব কথা ভেবে পড়াশোনা ছেড়ে বাড়ি এসে মৌসুমী নিজের কাধে , সংসারের দায়িত্ব তুলে নিলো।কিন্তু কিভাবে চলবে সংসার,নিজে মহিলা কি কাজ বা করবে ,তার পরে গ্রামের কিছু পড়ুয়াদের নিয়ে টিউশিন শুরু করেন কিন্তু গ্রামের মানুষের তেমন অর্থ নেই যে ভালোভাবে মাইনে দিয়ে দিবে। কিন্তু উপায় ?
তখন মাত্র ছয় কাঠা মত একটা চাষের জমি ছিল ও বড় দাদার রেখে যাওয়া কৃষি যন্ত্র গুলো নিয়েই শুরু করেন সবজির চাষ।এই ভাবে পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে ধরতে শুরু করেন।তখন তার চাষের বিষয়ে কোনো অভিজ্ঞতা নেই ,তখন কৃষি দপ্তরে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন সেই মত সবজি চাষ করতে থাকেন। সেই থেকে আজও জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন দৌলতাবাদের মৌসুমী বিশ্বাস।বতর্মানে তিনি প্রায় বিঘা চারেক জমিতে চাষবাস করছেন বলেও তিনি জানান। একজন মহিলা হয়ে যেভাবে কৃষিকাজ করে চলেছেন সেই দেখে রাজ্য ও ভারত সরকারের একাধিক পুরস্কারের ভূষিত হয়েছেন ।এমনকি অন্যান্য রাজ্যে থেকে পুরষ্কার পেয়েছে বলে জানান।এত বছরে পরিবারকে সাহায্য করার পাশাপাশি অন্যান্য কৃষকদেরও রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি।তার টার্গেট কিভাবে কম সার,কীটনাশক বাদে কৃষি কাজ করা যায় তা নিয়েই নব্য কৃষকদের নানান পথ দেখান তিনি। তার কাজে কুর্নিশ জানিয়েছেন এলাকাবাসী থেকে বিভিন্ন মহল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct