মোস্তাফিজুর রহমান,কলকাতা,আপনজন: চলছে রমজানের রোজা। প্রখর তাপ আর কাঠফাটা রৌদ্রে প্রাণ ওষ্ঠাগত রোজাদার মুসলিমদের। তথাপিও, এই কঠোর সাধনা থেকে পিছপা হচ্ছেন না ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। বরং হাসিমুখেই বরণ করে নিচ্ছেন এই কষ্টকে। ব্যতিক্রম নয় ময়দানও। একে প্রচন্ড গরম,তার উপর বায়োবাবল নামক ‘জেলখানায়’ বন্দী। সেই অবস্থাতেও রোজা রেখে নজির সৃষ্টি করছেন মহামেডানের একাধিক খেলোয়াড়,সাপোর্ট স্টাফ। কেমন কাটছে ‘ময়দানি রমজান’?কথা বলছিলাম সেখ ফাইয়াজের সাথে। রোজার প্রস্তুতি শুরু সেই ভোর তিনটে থেকে।’সেহরী’ তৈরিতে প্রধান ভূমিকা ফাইয়াজ আর আশিরের। রুটি,দুধ’সহ নানাবিধ খাবার তৈরিতে ‘রাঁধুনি’র রূপে ধরা দেন তাঁরা।
সেহরী শেষে অপেক্ষা ফজরের নামাজের। ওয়াক্ত হয়ে গেলে হোটেলের একটা পরিত্যক্ত জায়গা পরিষ্কার করে রেখেছে ফাইয়াজ ফায়সাল, কবিররা। সেখানে নামাজ আদায় করে নেন তাঁরা। নামাজের ইমামতি করেন সিরিয়ান ডিফেন্ডার শাহীর শাহীন। অতঃপর, একটু ঘুম।তারপর অনুশীলন। সকাল-বিকাল অনুশীলনের ফাঁকে নিয়মিত নামাজ আদায় করেন সহকারী কোচ শাহিদ রামন,কবির তৌফিকরা। ‘প্রাক্টিসের সময় নামাজের অসুবিধা হয় না?’ প্রশ্ন শুনে ফাইয়াজ বললেন,‘এক্ষেত্রে সবাই কোচ চের্নিশভ থেকে শুরু করে দীপু দা,প্রত্যেকে ভীষন হেল্পফুল।এমনকি আমাদের নামাজের (আসর) জন্য প্রাক্টিস একটু বিলম্বে শুরু হয়।শুধু তাই নয়, ইফতারির জন্য টিম মিটিংও নির্দিষ্ট সময়ের পরে শুরু হয়।’ ইফতারিও হয় বেশ ঘরোয়া পরিবেশে। বিভিন্ন ফলমূলের সাথে একটু তেলেভাজা না হলে জমে না ইফতার।তাই তেলেভাজার দায়িত্বও এসে পড়ে একেবারে গ্রাম্য পরিবেশে বেড়ে ওঠা হাসিখুশি ফাইয়াজের উপর। ফাইয়াজও দায়িত্বশীল ‘মায়ের’ মতো নিপুনভাবে ভাজেন চপ,বেগুনি ইত্যাদি।তবে, তাঁকে সতীর্থরা সাহায্যও করেন। ‘ম্যাচের দিন রোজা রাখা হয়’?উত্তরে ফাইয়াজ বলেন, ‘বিকালে ম্যাচ থাকলে রোজা রাখা সম্ভব হয় না।তবে রাত্রে ম্যাচ হলে রোজা রাখি।বিকালের ম্যাচেও তো আশির একদিন রেখেছিল। তবে,ম্যাচ ডে বাদে আমি, শাহিদ স্যর’রা নিয়মিত রোজা রাখি।’ সত্যি, দেশ,রাজ্য,শহর’ভেদে ফাইয়াজদের একসূত্রে বেঁধেছে পবিত্র রমজান।তাই খেলোয়াড়ি পরিচয়ের বাইরে ফাইয়াজ হয়ে যায় রাঁধুনি আর শাহীন ইমাম আর কোচ হয়ে যায় রন্ধন সহকর্মী!
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct