জয়প্রকাশ কুইরি,পুরুলিয়া,আপনজন: একেবারে গোড়া থেকেই কাহিনীর তদন্ত শুরু করে খুনির কাছে পৌঁছতে চাইছে সিবিআই। শুক্রবার দিনভর পুরুলিয়ার ঝালদায় সিবিআই-এর তৎপরতা দেখা যায় তাই আশায় বুক বাঁধছেন নিহত তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু। এদিন সারাদিন ধরেই সিবিআইকে দেখা গিয়েছে পুলিশ যাদেরকে কোনরকম ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি এমন লোকেদের সঙ্গে কথা বলতে। বৃহস্পতিবার আদালতে মামলা করার পর সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা কোনো তৎপরতা দেখান নি। শুক্রবার সকালে সিবিআইয়ের ডিআইজি অখিলেশ সিং এবং অন্য তিন তদন্তকারী অফিসার গোটা ঘটনা ঘিরে তৎপরতার সঙ্গে কাজ শুরু করে দেন। ঘটনার সামগ্রিক তথ্য জানতে সন্ধ্যা অবধি দফায় দফায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।এদিন সকালে প্রথমে সিবিআই তপন কান্দু খুনে প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।ঘটনার দিন নিহত তপন কান্দুর সঙ্গে বৈকালিক ভ্রমণে গিয়েছিলেন মোট পাঁচ জন ব্যক্তি।এদের মধ্যে নিরঞ্জন বৈষ্ণব নিজেই আত্মহত্যা করেছেন অন্য তিনজনকে এদিন জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনিদের বিষয়ে জানার চেষ্টা করেন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা।এরপরই ডেকে পাঠানো হয় নিহত তপন কান্দুর ভাইপো মিঠুন কান্দুকে।তার সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা কথা বলেন শহরের বেশ কিছু বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে। যার মধ্যে রয়েছেন সিপিআইএমের ঝালদা এরিয়া সম্পাদক উজ্জ্বল চট্টরাজ।এই জিজ্ঞাসাবাদ থেকেই পরিষ্কার সিবিআই ঘটনার পরিপার্শিক অবস্থা বুঝে নিতে চাইছে।তপন কান্দু খুনে পরি পার্শিক অবস্থা জানতে পারলেই খুনের মোটিভ পরিষ্কার হয়ে যাবে এ কথা ভাবছেন আধিকারিকেরা।যে পাঁচজন পুলিশ আধিকারিক ও পুলিশকর্মী ঘটনার দিন নাকা চেকিংয়ে উপস্থিত ছিলেন তাদের পুলিশ লাইনে ক্লোজ করে দায় সেরেছিলেন জেলা পুলিশ।সিবিআই ওই পাঁচজনকে ডেকে পাঠিয়ে তারা তখন কেন খবর পেয়েও ঘটনাস্থলে যান নি সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।একই সঙ্গে ওই এলাকায় নিয়ে গিয়ে নাকা চেকিং এর এলাকা থেকে ঘটনাস্থল কতটা দূরত্বের এবং সেখানে নজরদারি সম্ভব ছিল কিনা তা জানার চেষ্টা করেন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা।নিহতের পরিবারের দাবি নাকা চেকিং যারা করছিলেন তাদেরকে হামলার কথা বলা হলেও তারা ঘটনাস্থলে যান নি এমনকি খুনিরা মোটর বাইকে চেপে ওই এলাকা থেকে পালিয়ে গিয়েছিল।ফলে তারা খুন করে বাগমুন্ডি দিকে পালিয়ে যায়। যেটুকু জানা গিয়েছে সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা শুক্রবার রাতেই যাবেন ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলার জুরিডি থানার পুলিশের হাতে ধৃত কলেবর সিং-এর বাড়িতে।সেখানে অবশ্যই তারা জানতে চাইবেন ঘটনার দিন সময় কোথায় ছিল ?ঝালদার সঙ্গে তার কতদিন ধরে তার সম্পর্ক নেই? অর্থাৎ কলেবরের সিং যে খুনি এই তত্ত্ব এখনো পুরোপুরি বিশ্বাস করছেন না সিবিআই।সারাদিনের তৎপরতার পর সন্ধ্যার মুখে সিবিআইয়ের তদন্তকারী দলটি আবার একদফা কথা বলেন নিহত তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমার কান্দুর সঙ্গে।গোটা বিষয়টি নিয়ে শিবিরের আধিকারিকেরা সাংবাদিকদের সঙ্গে একটিও কথা বলেননি কিন্তু তাদের গতি প্রকৃতি এবং তাদের সামগ্রিক পর্যালোচনা দেখতে সাংবাদিকদের বাধা দেওয়া হয়নি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct