নিজস্ব প্রতিবেদক,কালিয়াচক,আপনজন: পাইপ ফাটিয়ে মাঝপথে পাচার হচ্ছে আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জল। প্রকৃত পানীয় জল পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রকাশ্যে এক অভিনব কায়দায় সাধারণ মানুষের জন্য দেওয়া আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল পাচার হয়ে যাচ্ছে। আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল সরবরাহের যে পাইপ লাইন রয়েছে তার মাঝকান দিয়ে ফুটো করে তা থেকে অবাধে পাচার করা হচ্ছে পানীয় জল। এই চিত্র ধরা পড়েছে কালিয়াচক-২ ব্লকের অনেক গ্রামে। সেই পানীয় জল বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে ২০-৩০ টাকা দামে। সংখ্যালঘু প্রধান এই এলাকায় রমযান মাস মুরু হযে গেছে। তাই ইফতার আর সেহরির সময় বেশি পরিমাণ পানীয় জলের প্রয়োজন হয়। সেই সময় মানুষ পাচ্ছেন না প্রয়োজনীয় পানীয় জল বলে অভিযোগ। আবার অনেকে নিজ নিজ বাড়িতে অবৈধ কানেকশনও নিয়ে ফেলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে এলাকা জুড়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হয়েছে।
অভিযোগ এক দশক আগের সাদিপুর আর্সেনিকমুক্ত জলাধার থেকে আর্সেনিক মুক্ত জল সরবরাহ করা হয় না। উল্টে এই জলাধার থেকে প্রায়ই কর্দমাক্ত লাল জল বেরোচ্ছে বলে অভিযোগ। এই নিয়ে রমজান মাসের শুরুতে বাঙ্গীটোলা পঞ্চানন্দপুর এলাকাজুড়ে জল নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, দীর্ঘদিন থেকে নেতা,মন্ত্রীকে বার বার আশ্বাসে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফলে প্রতিনিয়ত এই বিষাক্ত ব্যাবহারের অযোগ্য জলপান করে হাজার হাজার শিশু এবং মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। অতীতের মতো সুদূর ভবিষ্যতে আর্সেনিকোসিস অসুখে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে। এদিকে এদিন রবিবার সাদিপুরে অবৈধ জলের সংযোগ ও জল পাচার নিয়ে সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাদের দাবি, এই ধরনের অবৈধ সংযোগ বন্ধ করতে হবে। এদিন স্থানীয় মানুষ হাতে নাতে আর্সেনিক জল পাচারকারীদের আটক ও করে ফেলে। স্বভাবতই এই দুই কারনে জলাধারে আর্সেনিকমুক্ত জল পৌছায় না। প্রকৃত সরবরাহ করেও পানীয় জল পেতে বিঘ্ন ঘটছে।
প্রসঙ্গত, গত এক দশক থেকে সংশ্লিষ্ট ব্লকের বাঙ্গীটোলা এলাকার বেশিরভাগআর্সেনিকের প্রভাবের ফলে মানুষ চরম সমস্যার মধ্যে আছে। এলাকায় আর্সেনিকের প্রভাবে বিভিন্ন অসুখ বিসুখ এমনকি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সরকার প্রায় এক দশক আগে এই এলাকায় একটি আর্সেনিক মুক্ত জল প্রকল্প তৈরি করলেও নজরদারি, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এর উপকারিতা মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। ফলে ক্রমশই ক্ষোভ বাড়ছে মানুষের। বাঙ্গীটোলার সাদিপুরের ঋষিপাড়া ,পাঠান পাড়া , শেখপাড়া, সিংপাড়া, সহ বিস্তৃত অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ জলে আর্শেনিকের পরিমান গত দুই দশক ধরে সবচেয়ে বেশি। আর্সেনিকের বিষাক্ত ছোবলে গত দুই দশকে এই এলাকায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। এলাকায় আর্সেনিক সমস্যা মিটাতে মোথাবাড়ি বিধানসভা এলাকার বাঙ্গীটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতে সাদিপুর পানীয় জল প্রকল্প নামে একটি চালু হয় প্রায় এক দশক আগে। কিন্তু দিনের পর দিন গ্রামগুলোতে সঠিকভাবে পানীয় জল পৌঁছাচ্ছে না বলে অভিযোগ। এর ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে দিনের পর দিন ক্ষোভের মাত্রা ক্রমশই বেড়ে চলেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct