চৈত্র সেল
শঙ্কর সাহা
__________
বসন্ত এলেই যেন মনে হয় এইতো নতুন বছর আসতে শুধুই কিছুটা সময়ের অপেক্ষা।প্রকৃতির মাঝে এক খুশির ছোঁয়া। সেইদিন অফিস থেকে ফেরার সময় হঠাতই অমরেষের নজর পড়ে দোকানে দোকানে চৈত্র সেলের হিড়িক পড়েছে।দোকানে বাহারী রকমের পসার সাজিয়ে চৈত্রসেলের ভিড়।সবাইকে দেখে অমরেষের মনে ইচ্ছে জাগে সামনের শনিবার অফিস বন্ধ,সেইদিন মেয়ে-স্ত্রীকে নিয়ে চৈত্রসেলের কেনাকাটা করতে মিনিমার্কেটে আসবে সে।
ফিরতি বাসে জানালার পাশে বসে একমনে ভাবতে থাকে শৈশবের সেই দিনগুলোর কথা। শৈশবে বাবা চৈত্রসেলে একটি প্যান্ট আর একটি গেঞ্জি কিনে দিলেই তারা বেজায় খুশি।আর আজ!এক দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বাড়ির দিকে হাঁটতে থাকে সে। রাতে আজ তাড়াতাড়িই খেতে বসে অমরেষ।পাশে একমাত্র মেয়ে তিয়াশা।খেতে খেতে পাশে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বলে,”শুনছো,সামনের শনিবারে মিনিমার্কটে চৈত্রসেলে কেনাকাটা করতে যাবে।“স্বামীর মুখ থেকে কথাটি শুনেই রেগে যান অমরেষের স্ত্রী। “চৈত্র সেলে যতসব বাজে জিনিসগুলো পাওয়া যায় ।কোনো ভদ্রসমাজে এগুলো চলেনা।‘ কথা না বাড়িয়ে অমরেষ খেয়ে শুয়ে পড়ে। শুয়ে থেকে মনে পড়ে সেই দোকানগুলোর কথা।
পরের দিন সকালে চায়ের টেবিলে যখন অমরেষ পেপার পড়ছে হঠাৎই রান্না ঘর থেকে কাজের মেয়ে বিন্দি শাড়ির আঁচলে হাত মুছতে মুছতে এসে বলে,”কাকাবাবু,এমাসের মাইনের সাথে অগ্রিম কিছু টাকা দেবেন চৈত্র সেলে কিছু জিনিস কেনাকাটা ছিল।ছেলেমেয়েদের পড়ার জামা আর বিছানার চাদরটি বড্ড ছিঁড়ে গেছে।এইসময় দাম একটু কম পাওয়া যায়।সারাটি বছর অপেক্ষায় থাকি এইদিন গুলোর জন্যে। হঠাতই পকেট থেকে পাঁচশো টাকার দুটো নোট বের করে বিন্দির হাতে দিয়ে বলে, “এই নে ?চৈত্র সেলে কি কি কিনলি কাল কিন্তু দেখাস বিন্দি।”
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct