আপনজন ডেস্ক: ইউক্রেনে এ বছর পবিত্র রমজান মাসে এক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে চলেছেন দেশটির মুসলিমরা। চারপাশ থেকে গুলি আর আকাশ থেকে বোমা পড়ার আতঙ্কের মধ্যেই রোজা পালন করতে হচ্ছে তাঁদের। দিন যত যাচ্ছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানও তত জোরালো হচ্ছে। ঘোলাটে হচ্ছে যুদ্ধ পরিস্থিতি। অথচ দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের অপরিহার্য সহায়তার অনেক পরিকল্পনাই এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। নায়ারা নিমাতোভা একজন ক্রিমিয়ান তাতার ও মুসলিম লিগ অব ইউক্রেনের প্রধান। তাঁর স্বামী মুহাম্মদ মামুতোভ একজন ইমাম। নিমাতোভা বলেন, ‘আমাদের সবকিছু নতুন করে শুরু করতে হবে এবং পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।’
রোজার মাসটিতে নিমাতোভার পরিকল্পনা, চেরনিভিৎসি শহরের ইসলামিক সেন্টারে তাঁর সঙ্গে থাকা বাস্তুচ্যুত মুসলিমদের সঙ্গে ইফতার করবেন তিনি। ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় ওই শহর থেকে আল-জাজিরাকে নিমাতোভা বলেন, যুদ্ধ শুরুর পর বহু মুসলিম দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। এখনো যাঁরা আছেন, তাঁদের সহায়তা করা প্রয়োজন। তিনি নিজেও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিঝঝিয়া থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এ প্রদেশের একটি অংশ এখন রুশ সেনাদের নিয়ন্ত্রণে। অর্থডক্স খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত ইউক্রেনের প্রায় ১ শতাংশ অধিবাসী মুসলিম। দেশটিতে যুদ্ধ শুরুর আগে ২০ হাজারের বেশি তুর্কি নাগরিক বসবাস করতেন। পাশাপাশি ছিলেন বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্যসংখ্যক তার্কিক জনগণ, যাঁদের অধিকাংশ ক্রমিয়ান তাতার। এসব মুসলিমের জন্য এবারের রমজান মাসটা একেবারেই ভিন্ন। রাশিয়ার দফায় দফায় বোমা হামলায় তছনছ ইউক্রেনের শহরগুলো। বিভিন্ন স্থানে জারি করা হয়েছে কারফিউ; সন্ধ্যায় চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা। পবিত্র রমজানের মাসজুড়ে সারা দিন রোজা রেখে ঠিক এ সময়ে ইফতারের জন্য একত্র হন মুসলিমরা। অথচ যুদ্ধের কারণে এবার অন্যদের মতোই বাস্তুচ্যুত মুসলিমরা নিজ সম্প্রদায়, পরিবার ও বন্ধুবান্ধব থেকে আলাদা হয়ে পড়েছেন। নিমাতোভা বলেন, ‘আমাদের পরিবারের জন্য, নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাতের জন্য ও নিজেদের দেশ ইউক্রেনের জন্য প্রার্থনা করতে এবং আল্লাহর ক্ষমা পেতে (যুদ্ধের মধ্যেই) রমজান মাসে আমাদের তৈরি থাকতে হবে।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct