সম্প্রীতি মোল্লা,ভাতার,আপনজন: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির ধরা পড়ল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারে। এক ব্রাহ্মণ যুবকের মৃতদেহ সৎকার করলেন স্থানীয় বেশ কয়েকজন মুসলিম যুবক। “মোরা একই বৃন্তে, দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান, হিন্দু তার নয়নমণি মুসলিম তার প্রাণ”। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা কবিতা আজ যেন ফুটে উঠল ভাতারে। বুধবার সকালে ভাতার বাজারের গার্লস স্কুল পাড়ার বাসিন্দা রানা চক্রবর্তী অসুস্থ হয়ে পড়েন।তার বাবা রবি শংকর চক্রবর্তী রানার বন্ধু ভাতারের বলগোনার সাদ্দাম শেখকে ফোন করে জানান অসুস্থতার কথা। সাদ্দাম তাকে একটি গাড়ি করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে নিয়ে আসছিলেন। তখনই রাস্তাতেই মারা যান রানা চক্রবর্তী। এরপর তাকে ঘুরিয়ে নিয়ে যায় ভাতার বাজারে। রানা চক্রবর্তীর আদি বাড়ি মঙ্গলকোটের কাঁকোড়া গ্রামে। পড়াশোনা সূত্রে রানা দীর্ঘদিন রয়েছেন ভাতার বাজারে। মৃত বন্ধু রানার মা বাবা অসুস্থ তাই সাদ্দাম সেখ-এর সহযোগিতায় ১০-১২ জন মুসলিম ব্যক্তি সহ তাদের আত্মীয়রা রানা চক্রবর্তীর দেহ ভাতার বাজারের একটি শ্মশানে নিয়ে গিয়ে সৎকার করেন।
রানা চক্রবর্তীকে কাঁচা বাসের খাটে যখন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল চারদিকে চার মুসলিম যুবক। শেখ সাদ্দাম, শেখ টিয়া আলম, শেখ শফিকুল ইসলাম ও নজরুল হক। এ ছবি যেন অনন্য ছবি যা ভাতার বাজারের মানুষকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য বার্তা দিয়ে গেল। তাকে নিয়ে আসা হয় ভাতার বাজারের একটি শ্মশানে। সেখানেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। মুসলিম ব্যক্তিদের সহযোগিতায় শেষ কাজ সম্পন্ন হলো রানা চক্রবর্তীর। বামশোর গ্রামের বাসিন্দা নজরুল হক জানান, ‘যেখানে হিন্দু-মুসলিম নিয়ে গোটা দেশে এক রাজনীতি শুরু হয়েছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ভাতারের এই আজকের এই ছবি সম্প্রীতির মেলবন্ধন ঘটাল।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct