আপনজন ডেস্ক: মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা বলছে, আমাদের সৌরজগত ছাড়াও নিশ্চিত কমপক্ষে ৫ হাজার গ্রহ আছে। সর্বশেষ ৬৫টি বহির্জাগতিক গ্রহ নাসা এক্সোপ্লানেট আর্কাইভে যুক্ত হয়েছে। একে সোমবার বৈজ্ঞানিক এক মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ খবর দিয়ে অনলাইন সিএনএন বলেছে, পিয়ার-রিভিউ হওয়া সায়েন্টিফিক পেপার থেকে যেসব এক্সোপ্লানেট বা বহির্জাগতিক গ্রহ আবিস্কারের তথ্য পাওয়া যায়, তার সংগ্রহশালা হলো এই আর্কাইভ। প্যাসাডেনায় অবস্থিত নাসা এক্সোপ্লানেট সায়েন্স ইনস্টিটিউটের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষণা বিজ্ঞানী এবং আর্কাইভের শীর্ষ স্থানীয় বিজ্ঞানী জেসি ক্রিস্টিনসেন বলেন, এটা শুধু একটি সংখ্যা নয়। এসব সংখ্যার প্রতিটি এক একটি নতুন বিশ্ব। এক একটি ব্রান্ড নতুন গ্রহ। তাদের সম্পর্কে আমরা সব কিছু জানি না।
তাই এদের প্রতিটির বিষয়ে আমি উদ্বেলিত। বহির্জাগতিক গ্রহ আবিষ্কারের এক স্বর্ণালী যুগে বসবাস করছি আমরা। যদিও এর আগে আমাদের সৌরজগতের বাইরে গ্রহের অস্তিত্বের বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে। এইসব জগতের কথা প্রথম আবিষ্কার হয় ১৯৯০ এর দশকে। বহির্জাগতিক এসব গ্রহের সংখ্যা এটাই প্রতিনিধিত্ব করে যে, এসব আমাদের সৌরজগতের মতো নয়। এর মধ্যে আছে পৃথিবীর চেয়ে বড় এক জগত। যাকে বলা হয় সুপার-আর্থস। পৃথিবীর চেয়ে বড় মিনি-নেপচুন। তবে তা নেপচুনের চেয়ে ছোট। কমপক্ষে একটি নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে তার চারপাশে ঘোরে এমনও গ্রহ আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। আবার হোয়াইট ডর্ফ বা সাদা বামন নামের মৃত তারকাকে কেন্দ্র করে কেউ কেউ ঘুরছে। এখন পর্যন্ত যেসব বহির্জাগতিক গ্রহ আবিষ্কার হয়েছে তার মধ্যে শতকরা ৩০ ভাগ হলো গ্যাসের তৈরি এক জায়ান্ট আকৃতির গ্রহ। শতকরা ৩১ ভাগ সুপার-আর্থের মতো। শতকরা ৩৫ ভাগ হলো নেপচুনের মতো। আর শতকরা ৪ ভাগ হলো পার্থিব বা পৃথিবী ও মঙ্গলগ্রহের মতো পাথরযুক্ত। এর আগে যেসব বহির্জাগতিক গ্রহ আবিস্কার করা হয়েছে তা করা হয়েছে গ্রহ অনুসন্ধানী টেলিস্কোপ ও স্যাটেলাইট ব্যবহার করে। যেমন স্পিটজার স্পেস টেলিস্কোপ, কেপলার স্পেস টেলিস্কোপ এবং ট্রানজিটিং এক্সোপ্লানেট সার্ভে স্যাটেলাইট। ২০০০-এর দশকের শুরুতে ক্রিস্টিনসেন যখন গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থী তখন মাত্র ১০০ বহির্জাগতিক গ্রহের সম্পর্কে জানা গিয়েছিল। ক্রিস্টিনসেন বলেছেন, নিশ্চিত ৫ হাজার গ্রহের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ আবিষ্কার করতে বিজ্ঞানীদের সহায়তা করেছে কেপলার। নতুন ব্যাচে যে ৬৫টি গ্রহের কথা বলা হয়েছে তার বেশির ভাগই সুপার-আর্থের মতো এবং সাব-নেপচুনের মতো। আর কিছু আছে বৃহস্পতির মতো বিশাল উত্তপ্ত গ্রহ। পৃথিবীর সমান দুটি গ্রহ আছে। কিন্তু সেখানে তাপমাত্রা প্রায় ৬২০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে বসবাসের যোগ্য গ্রহের চেয়ে সেখানে উত্তপ্ত পাথরের পরিমাণ বেশি। তিনি আরও বলেছেন, এমন একটি সিস্টেম আছে যাতে ৫টি গ্রহ আছে। তা একটি লোহিত বামন তারকা, যা ছোট্ট এবং ঠা-া হয়ে আসছে তাকে কেন্দ্র করে ঘুরছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct