রফিকুল হাসান,কলকাতা,আপনজন: এ যেন কবরস্থানেও রাজনীতি! একজন মানুষ ইন্তেকাল করেছেন, ইসলামী রীতিনীতি মেনে তাঁকে কবরস্থও করা হয়েছে। সেই কবর সুন্দর করে মার্বেল পাথর দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। এতক্ষণ পর্যন্ত তবুও ঠিক ছিল। কিন্তু কবরের সেই মার্বেল পাথরের গায়ে জ্বল জ্বল করছে লাল রঙের কাস্তে হাতুড়ি তারা যুক্ত সিপিএম পার্টির সিম্বল। আর এই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন? সরগরম সোশ্যাল মিডিয়া। মরহুম হাসিম আবদুল হালিম, একজন সফল রাজনীতিবিদ হিসেবে নামটা বেশ পরিচিত। ১৯৭৭ সালে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসে বামফ্রন্ট। সে বছরই উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙ্গা বিধানসভা থেকে সিপিএম প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়ান মরহুম হাসিম আবদুল হালিম। প্রথমবারেই ভোটে জিতে তিনি আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। এর পর তাঁকে আর ফিরে তাকাতে হয় নি। তিনি ছয় বার বিধানসভা নির্বাচনে জিতেছেন। ১৯৮২ সালে হালিম সাহেব বিধানসভার স্পিকার নির্বাচিত হন। সেই থেকে টানা ২০১১ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ রাজ্যে তৃণমূল সরকার আসার আগে পর্যন্ত তিনি দক্ষতার সাথে স্পিকারের দায়িত্ব সামলেছেন। সেকথা বিরোধী দলের বিধায়করাও অকপটে স্বীকার করেন। ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে তিনি প্রয়াত হন। কলকাতার গোবরা কবরস্থানে তাঁকে ইসলামী রীতি নীতি মেনে দাফন করা হয়।
বলাবাহুল্য, সাধারণত কমিউনিস্টরা ধর্ম মানেন না। তবে ভোট ব্যাঙ্কের জন্য আজকাল বাম নেতারা পুজো মণ্ডপের বাইরে বই এর স্টল দেওয়া থেকে শুরু করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় এখন সবই করছেন। কিন্তু তাই বলে কবরস্থানের ভিতরেও রাজনীতি ঢুকিয়ে দেবে সিপিএম! উঠছে সে প্রশ্ন। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনরাও সরব। তবে এই বিষয়কে পাত্তা দিতে নারাজ মরহুম হাসিম আবদুল হালিম সাহেবের পুত্র সিপিএম নেতা ডা. ফুয়াদ হালিম। পারিবারিক ভাবে নাকি দলীয় ভাবে এটা করা হয়েছে এবং এই বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কি? এ বিষয়ে জানতে ডা. ফুয়াদ সাহেবকে ফোন করা হলে তাঁর একবাক্যে জবাব, এটা পাবলিক ডিস্কার্সন এর কোনও বিষয়ই নয়। যদিও এই ঘটনাকে ঘিরে ক্ষোভ জন্মেছে বাংলার মুসলিম সমাজে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলার এক সংখ্যালঘু নেতা বলেন, এটা খুব দুঃখজনক ঘটনা। রাজনীতি, রাজনীতির জায়গায় থাক আর ধর্ম, ধর্মর জায়গায় থাক। রাজনীতির সঙ্গে ধর্মকে গুলিয়ে ফেললে হবে না। এটা ওনাদের ভাবা দরকার ছিল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct