মঞ্জুর মোল্লা,নদিয়া,আপনজন: লাল ফিতের ফাঁসে আটকে স্বামীর পেনশনের ফাইল। স্বামীর মৃত্যুর পর চালু হয়নি স্ত্রীর পেনশন।এমতাবস্থায় চরম অর্থ কষ্টের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন নদীয়ার তাহেরপুর এ ব্লকের কল্পনা চক্রবর্তী ও তার ছেলে শুভ চক্রবর্তী। ধারদেনায় জর্জরিত হয়ে বাড়ি বিক্রির মত কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে পথে বসতে চলেছে এই চক্রবর্তী পরিবার।
নদীয়ার বাদকুল্লা মুগরাইল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন জীবন চক্রবর্তী। চাকরী থাকা অবস্থায় ২০২২সালের ১০ নভেম্বর মারা যান জীবন বাবু।মৃত্যুর আগে জীবনবাবুর চিকিৎসার জন্য বিস্তর ধারদেনা হয়ে যায় চক্রবর্তী পরিবারের। এরপর চরম অর্থকষ্ট শুরু হয় সদ্য স্বামীহারা কল্পনা চক্রবর্তীর পরিবারে। স্বামী মারা যাওয়ায় মাইনে বন্ধ হয়ে। সংসার চালাতে বেড়ে চলে ঋণের মাত্রা। কারণ দীর্ঘ দেড় বছর কাটলেও এখনো পেনশন চালু হয়নি জীবন চক্রবর্তীর স্ত্রী কল্পনা চক্রবর্তীর। বর্তমানে ধার শোধ করার জন্য বসবাস করার বাড়িটি পর্যন্ত বিক্রয়ের চিন্তাভাবনা শুরু করেছে কল্পনা চক্রবর্তী ও তার ছেলে। জীবন চক্রবর্তী মারা যাওয়ার পর তার পেনশনের জন্য এমন কোন জায়গা নেই যে সেখানে যাননি কল্পনা চক্রবর্তী!! এসআই অফিস থেকে শুরু করে ডি আই অফিস নদীয়ার জেলাশাসকের দপ্তর, নবান্ন এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি কালীঘাট পর্যন্ত। কিন্তু এত দরবার করেও সুরাহা মেলেনি।স্বামীর পেনশনের অনুমোদন আটকে আছে সরকারি বাবুদের তৈরী লাল ফিতের ফাঁসে। হাজার কষ্টের কথা বললেও নানান অনুরোধেও চিড়ে ভেজেনি শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের। যার ফলে চিকিৎসার কারণে ঋণে জর্জরিত এক সময়কার মানুষ গড়ার কারিগর প্রয়াতঃ জীবন চক্রবর্তীর স্ত্রী কল্পনা চক্রবর্তী ও তার পরিবার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ মানুষের জন্য চালু করেছেন দুয়ারে সরকার ও পাড়ায় সমাধানের মত বিভিন্ন জনহিতকর প্রকল্প। কিন্তু সেই প্রকল্পগুলি যে বাস্তবে কতটা রূপায়িত হয়েছে, তাহেরপুরের চক্রবর্তী পরিবারের এই ঘটনায় তা নিয়ে কিন্তু সন্দেহ থেকেই যায়!! সদ্য স্বামীহারা কল্পনা চক্রবর্তীর এখন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটাই আবেদন দয়া করে তাঁর স্বামীর পেনশনের ফাইলটি যদি পাশ হয়ে আসে তাহলে হয়তো বেঁচে যাবে একটি পরিবার।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct