নাজিম আক্তার,হরিশ্চন্দ্রপুর,আপনজন: পরিবারের মুখে দুমুঠো ভাত তুলে দেওয়ার আশায় দুই কাটা পা নিয়ে বিহার থেকে বাংলায় এসে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার লালনপালন করে আসছেন টিঙ্কু সেখ (৩৭)।জানা যায় তার বাড়ি বিহার রাজ্যের আজমনগর থানার বালিপাড়া গ্রামে। তার পরিবারে রয়েছে বয়স্ক পিতা-মাতা,স্ত্রী ও দুই ছেলে এবং এক মেয়ে।অভাবের সংসার।বয়স্ক পিতা কাজ করতে পারে না।অর্ধাহারে ও অনাহারে কাটছে তাদের দিন।ভিক্ষাবৃত্তি করেই ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা,বয়স্ক পিতা মাতার চিকিৎসা ও আহারের অর্থ জোগাড় করছেন টিঙ্কু।
টিঙ্কু সেখ জানান,১০ বছর বয়সে বাবার সঙ্গে বাজারে যাওয়ার সময় আজমনগর রেল স্টেশনে লাইন পারাপার করার সময় ট্রেনের চাকায় তার দুই পা কেটে যায়।অস্ত্রোপচার করেও দুই কাটা পা কে জোড়া লাগানো যায়নি।চিকিৎসা করাতে গিয়ে জমানো অর্থ শেষ হয়ে গেছে।পরিবারে লবণ আনতে পান্তা ফুরানো অবস্থা।সরকারি থেকে মাসে ছয়শো টাকা ভাতা পেলেও তা দিয়ে সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছে।তাই পরিবারের মুখে দুমুঠো অন্ন তুলে দেওয়ার আশায় দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ভিক্ষাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন তিনি।ভিক্ষাবৃত্তি করেন দৈনিক তিন থেকে চারশো টাকা রোজগার হয়।এই সামান্য রোজগার দিয়ে ছেলে মেয়ের শিক্ষার খরচ কুলোয় না।তাই অন্যের জমিতে পরিবারকে দিনমজুরের কাজ করতে হয়।তিনি প্রতিদিন সকালে হুইলচেয়ারে বসে বিহারের বালিপাড়া গ্রাম থেকে বাংলার মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর,চাঁচল,তুলসীহাটা ও কুশিদা। সাপ্তাহিক হাটগুলিতে রাস্তায় শুয়ে শুয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করেন।একটি ভাঙাচোরা ঘরে কোনো রকম ভাবে দিন গুজরান করেন পরিবারের লোকেরা। কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি বা সরকার বাড়ি করে দেওয়ার পাশাপাশি কিছু আর্থিক সহযোগিতা করলে অনেকটাই আর্থিক সাবলম্বী হয়ে উঠবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct