নকিব উদ্দিন গাজী,ডায়মন্ডহারবার,আপনজন: শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যে ভরা হুগলি নদীর তীরে ছোট্ট শহর ডায়মন্ড হারবার, যার পরোতে পরোতে মিশে আছে ঐতিহ্য মাখা ভালোবাসা। আর সেই ডায়মন্ড হারবার শহরে এদিকে-ওদিকে ছড়িয়ে রয়েছে ২৮ জন রিয়েল হিরো, যারা পর্দার পেছন থেকে সুন্দর ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হীরক বন্দরী ডায়মন্ড হারবারকে তুলে ধরেন আমাদের সামনে। যখন আমরা গভীর ঘুমে রাত যাপন করি। ঠিক তখনই মারুফা অর্চনা মরিয়ম দের মতন রিয়েল হিরোরা ঝাঁটা হাতে বেরিয়ে পড়ে গোটা ডায়মন্ডহারবার শহরকে পরিষ্কারের লক্ষ্যে। এরা ডায়মন্ডহারবার পৌরসভার সাফাই কর্মী একজন দুজন নয় এইরকম ২৮ জনের একটি টিম রয়েছে মহিলাদের। যারা নিজেদের মধ্যে কাজ ভাগ করে নিয়ে ডায়মন্ড হারবার হসপিটাল মোড় থেকে মুক্তাঙ্গন পর্যন্ত সাফাই এর কাজ করেন প্রত্যেকদিন। একটু কষ্ট করে যদি কাক ভোরে উঠে ডায়মন্ডহারবার শহর প্রদক্ষিণ করা যায় শোনা যাবে ঝাঁটার খসখসানি শব্দ। যখন মানুষ গভীর ঘুমে ব্যাস্ত তখন এই মহিলারাই ঝাঁটা হাতে বেরিয়ে পড়ে শহর পরিষ্কারের লক্ষ্যে। এদের কারোর বাড়ি ডায়মন্ড হারবার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে, কাঠের বাড়ি তিন নম্বর ওয়ার্ডে আবার কারোর বা পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে। সারাদিনের কর্মব্যস্ততার পরে যখন আমরা গভীর ঘুমে ব্যাস্ত থাকি তখন ঠিক এই রিয়েল হিরো রাই গোটা ডায়মন্ডহারবার শহর চকচকে করে তোলার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তবে শুধুমাত্র এই কাজ নয় সংসারের অভাব অনটনের দায়ে কেউবা এই কাজের পরে চলে যায় অন্যের বাড়িতে পরিচালিকার কাজ করতে আবার কারোর বা সংসারের সমস্ত কাজ সেরে সামলাতে হয় পরিবার-পরিজনদের নিয়ে। এই ২৮ জন মহিলা নিজেদের মধ্যে তিন থেকে চারটি গ্রুপে ভাগ হয়ে যায় প্রত্যেকদিন যার মধ্যে রাস্তার একদিকের ফুটপাতের কিছুটা অংশ একজন পরিষ্কার করলে অন্যজন করে অপরপ্রান্তের ফুটপাতের অংশটা, ঠিক এইভাবে নিজেদের মধ্যে কর্মবন্টন এর মাধ্যমে এই ২৮ জন মহিলা বছরের প্রত্যেকটি দিনই এই ভাবে গোটা ডায়মন্ডহারবার শহর কে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে বেরিয়ে পড়েন সেই কাকভোরে। কেউ আসে ভোর চারটের সময় আবার কেউবা পাঁচটা মানুষের চোখ খুলে চায়ের কাপে চুমুক দেওয়ার আগেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে ওঠে গোটা ডায়মন্ডহারবার শহর। নারী দিবসের বিশেষ দিনে তাই এ্সব রিয়েল হিরোদের সাবাস জাানচ্ছেন মানুষ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct