বাবলু প্রামাণিক,বারুইপুর,আপনজন: করোনা মহামারীর জেরে লকডাউন সংসারের নেমেছিল চরম আর্থিক সংকট। সংসারের হাল ফেরাতে নিজের হাতে চায়ের কেটলি তুলেনিয়েছিল পরিবারের ছোট ছেলে। পড়াশোনার পাশাপাশি ছোট্ট একটি দোকান চালিয়ে সংসারের হাল ফেরাতে ব্যস্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনা বারুইপুরে মাদার হাট পপুলার একাডেমির মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীর সঞ্জয় দত্ত। বারুইপুরের স্টেশন লাগোয়া ছোট্ট একটি মনোহারী দোকান চালাতে সঞ্জয়ের বাবা কাজল দত্ত। মা-বাবা ওর দিদির নিয়ে ছোট্ট পরিবার সঞ্জয়ের । করোনার কালের লকডাউন এর জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বাবার ব্যবসা। বাবার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে সংসারে নেমে এসেছে চরম আর্থিক সংকট। সংসারের চরম আর্থিক সংকট ঘোচাতে চায়ের দোকান খুলে বসে সঞ্জয়। চায়ের দোকান চালানোর পাশাপাশি নিজের পড়াশোনায় চালাত সঞ্জয়। সামনে মাধ্যমিক পরীক্ষা জীবনের বড় পরীক্ষা বসার আগে চায়ের দোকানে বই নিয়ে বসে দোকান ও নিজের পড়া দুটোই চালাচ্ছে মোদার হাট পপুলার একাডেমির মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীর সঞ্জয় দত্ত। ছেলের এই কর্মকান্ডের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। সঞ্জয়ের বাবা কাজল দত্ত বলেন, লকডাউনের যাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তার পরে সংসারে নেমে এসেছিল চরম আর্থিক সংকট। একদিন ছোট্ট সঞ্জয় আমাকে বলে তোমার দোকানের পাশেই আমি একটা ছোট্ট চায়ের দোকান দেবো। আমি অত কিছু না ভেবে বলে দিয়েছিলাম হ্যাঁ দিবি। দোকানের সামনে প্রথমে চায়ের দোকান দিয়ে ধীরে ধীরে সংসারের হাল ধরতে থাকে সঞ্জয়। জীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক মাধ্যমিকের আগেই বই নিয়ে দোকান ও নিজের পড়া সামলাচ্ছে সঞ্জয়। মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীর সঞ্জয় বলে, লকডাউন এর জেরে পরিবারের কি করুণ দশা হয়েছিল তা আমরা দেখেছি এক বেলা খেতে পেতাম না। আমার দিদির ডিগ্রী কোষের পড়াশোনা চালাচ্ছি। লকডাউন এর সময় সংসার টানতে হিমশিম খেয়ে গেছিলো বাবা। বাবার অনুমতি নিয়ে বাবার দোকানের পাশে একটি ছোট্ট চায়ের দোকান করি পরবর্তীকালে সেই ব্যবসা ধীরে ধীরে বড় হয়। চা বিক্রি করে সংসার সুখে স্বাচ্ছন্দে চলছে। সামনে পরীক্ষা তাই দোকানেও বই নিয়ে এসে পড়ছি। ৩ঘন্টা করে আমি পড়াশোনা করছি। ৫ঘন্টা ধরে দোকানের পিছনে আমি সময়। সোমবার থেকে আমাদের পরীক্ষা। পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করে আমি পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করবো। আগামী দিনে আমি ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct