ওয়াসিফা লস্কর,মগরাহাট,আপনজন: দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মগরাহাট দু’নম্বর ব্লকের অন্তর্গত ধনপোতা হালদার পাড়ার বাসিন্দা দিলীপ হালদার। নামে ওই ৪৫ বছরের যুবক রাজমিস্ত্রি জোগাড়ে কাজ করতেন দীর্ঘ দিন তিনি। সেই কাজের সূত্রে তিনি নৈহাটি ভাটপাড়া বুদ্ধ দেব রানা সঙ্গে বন্ধুর মধ্যে আবদ্ধ হয়েছিলেন বুদ্ধদেব রানার সঙ্গে পরিচয় হয়। তা প্রায় ১৫ বছরের বন্ধুত্ব করেন নৈহাটি ভাটপাড়া বুদ্ধদেব রানা নামে সিআরপিএফ জওয়ান। তাদের বন্ধুত্ব হায়রে গিয়েছিল কয়েক বছর। বর্তমানে ধনপোতার হালদার পাড়ার দিলীপ হালদার ফেরির কাজে গিয়েছিলেন নৈহাটিতে। তারপর বন্ধুকে দেখতে যান। গিয়ে দেখলেন বন্ধু অসুস্থ। বন্ধু নৈহাটি ভাটপাড়া বুদ্ধ দেব রানা কিডনি খারাপ শোনার পরে বাড়ি চলে আসেন। মগরাহাটের দিলীপ হালদার তারপর বাড়ির স্ত্রী পুতুল হালদারের সঙ্গে আলোচনা করেন। বন্ধু বুদ্ধদেব রানা দু’বছর আগে থেকে শরীর খারাপ ছিল। অবশেষে ডাক্তারবাবুদের চেকিং করার পরেই নৈহাটি ভাটপাড়া বুদ্ধদেব রানার একটি কিডনি ড্যামেজ হয়ে যায় বলে দিয়েছিলেন ডাক্তারবাবুরা। বন্ধু দিলীপ হালদার ধনপোতার হালদারপাড়া বাড়িতে ফিরে স্ত্রীর কাছে গল্প করলেন বন্ধু বুদ্ধদেব রানা বলেছেন তার কিডনি ড্যামেজ হয়ে গেছে শীঘ্রই চেঞ্জ করতে হবে নইলে আর বাঁচতে পারব না। এই কথা শোনার পর দিলীপ হালদারের স্ত্রী মগরাহাট দু নম্বর ব্লকের বিডিও শেখ আব্দুল্লাহর কাছে আসতে বলেছিলেন নৈহাটির বুদ্ধদেব রানাকে। তারপরেই বিডিও অফিসে আসেন দুই বন্ধু ও তাদের পরিবার। দিলীপ হালদার ও তার স্ত্রী পুতুল হালদার জানান, আমাদের দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্ব প্রায় পনেরো বছরের। আমাদেরও সাহায্য করতেন আগে দায় বিপদে। বন্ধুত্ব রক্ষায় তাই আমরা সবাই চাই নৈহাটি ভাটপাড়া বন্ধু বুদ্ধদেব রানাকে কিডনি দান করব। এরপর মগরাহাটের বিডিও শেখ আব্দুল্লাহ, মগরাহাট প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিওএমএইচ অনয় ঘোষ ও মগরাহাট থানার প্রশাসনিক তরফ থেকে বিমল সরকার সাব-ইন্সপেক্টরকে নিযে বৈঠকে বসেন। দীর্ঘক্ষণ তাদের কথাবার্তা শুনলেন তারপরেই সিদ্ধান্ত করলেন বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসার জন্য বললেন। এর মধ্যে দুই বন্ধু নৈহাটি ভাটপাড়া বন্ধু বুদ্ধদেব রানা এই বাঁচার আশার স্বপ্ন দেখার মুহূর্তেই মগরাহাটের ধনপোতা হালদার পাড়ার দিলীপ হালদারকে জড়িয়ে ধরেন। ১৫বছরের বন্ধুত্ব রক্ষায় কিডনি দান করবেন বুদ্ধ দেব রানাকে। নৈহাটি ভাটপাড়া আর বুদ্ধদেব রানার স্ত্রী পিংকি রানা জানান আমি খুব খুশি হলাম। নিঃস্বার্থে আমার স্বামীর জন্য কিডনি দান করছেন। ঈশ্বরের তাদের ভাল করবেন। এর পাশাপাশি দিনমজুরের কাজ করা বন্ধু দিলীপ হালদারের স্ত্রী পুতুল হালদার চোখের অশ্রু মুছতে মুছতে বললেন, এ কাজ ভগবানের আদেশ এই আমার স্বামী দিলিপ হালদার ওই রানাকে কিডনি দান করছেন, আমি গর্বিত। কিন্তু আমার একটা ছেলে আছে ১৪ বছরের বয়স। ক্লাস এইটে বর্তমান পড়ে। পুতুল হালদারজানান, তিনি পরিবারের স্বার্থে কলকাতায় বাবুদের বাড়ি কাজ করেন। যদিও এই বন্দুত্বের পুরস্কার হিসেবে রেলওয়ে জওয়ান বুদ্ধদেব রানা তাদের পারিবারিক কোন সমস্যা হলে দেখভাল করার আম্বাস দিলেন। সেই বন্দুক্রে ফল স্বরূপ অবশেষে দিলীপ হালদান কিডনি দান করছেন বুদ্ধদেব রানার জন্য।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct