সেক আনোয়ার হোসেন,সুতাহাটা,আপনজন: কর্নাটকের ছায়া এবার এ রাজ্যে এসে পড়ল। পূর্ব মেদিনীপুরের সুতাহাটার কুকড়াহাটি হাইস্কুলে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর হিজাব খুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠল এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। স্থানীয় মানুষদের অভিযোগ, ওই স্কুলের জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষক সন্দীপ পড়িয়াল মঙ্গলবার ক্লাসে সবার সামনে রোমা খাতুন (নাম পরিবর্তিত) নামে এক ছাত্রীর ‘হিজাব’ (ওড়না) খুলে নিয়ে বলতে থাকেন, দেখ এবার কেমন লাগছে। ক্লাসে ছাত্রছাত্রীদের সামনে একজন ছাত্রীর ‘হিজাব’ খুলে নেওয়ার ঘটনার কথা বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মাকে জানালে তাদের সঙ্গে ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরাও। একের পর এক গ্রামবাসী বিক্ষোভ দেখাতে স্কুলের সামনে জড়ো হন। তারা অবিলম্বে শিক্ষককে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্কুল থেকে শিক্ষককে বহিষ্কারের দাবিতে সরব হন। এই নিয়ে হলদিয়ার সুতাহাটা ব্লকের কুকড়াহাটি অঞ্চলের অন্তগর্ত কুকড়াহাটি হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রীর পোশাক ব্যবহার নিয়ে বিতর্কে জড়ালেন ওই স্কুলের শিক্ষক। যা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে এলাকাজুড়ে।
অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম সন্দীপ পড়িয়াল। বাড়ি মহিষাদলের তেরপেখিয়া মোড় সংলগ্ন এলাকায়।ওই স্কুলের জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে পরিচিত। ওই শিক্ষক ক্লাসের মধ্যেই ছাত্রীর মাথায থেকে ‘হিজাব’ বা ওড়না খুলে নেবেন তা ক্লাসের কেউ বুঝে উঠতে পারেনি। যে ছাত্রীটির সঙ্গে এই অভব্য আচরণ করা হয়েছে তার বাড়ি সুতাহাটা ব্লকের হরিবল্লভপুর গ্ৰামে। ওই ছাত্রীর নাম রোমা খাতুন (নাম পরিবর্তিত)। মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ এই ঘটনাটি ঘটার পর বুধবার সকালে ওই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা সুতাহাটা থানায় লিখিত অভিযোগ করে। এদিন বিদ্যালয়ে ওই শিক্ষক এলে ক্ষোভে ফেটে পড়ে অভিভাবক সহ সাধারণ মানুষ,। তাদের দাবি ওই শিক্ষককে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে,বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার সহ মুচলেখা দিতে হবে,। মুহুর্মুহু স্লোগান দিতে থাকেন সাধারণ মানুষ,। তাদের দাবি যতখন না ক্ষমা চাই ততখন এই আন্দোলন চলবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অবিভভাক বলেন এটা গুজরাট কর্নাটক উত্তরপ্রদেশ নয় এটা সম্প্রীতির বাংলা। এখানে কোন ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার জায়গা নেই। ততখনে সুতাহাটা থানার ও সি বিনয় কুমার মান্না বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে হাজির হন। এক এস আই অফিসার বলেন, ওই শিক্ষকটি যা করেছেন তা আইনত অপরাধ। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থ নিচ্ছি। সুতাহাটা থানার পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষককে নিয়ে এসে তাকে সাসপেন্ড করার কথা জানান। শিক্ষা দপ্তরের থেকে যা ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার তা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সুতাহাটা বিডিও-র উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর অভিযুক্ত শিক্ষক প্রকাশ্যে মাইকে ক্ষমা চান স্থানীয় জনগণের কাচে তার এই কৃতকর্মের জন্য। এমনকী এই বিদ্যালয়ে আর চাকরি করবে না বলে প্রতিশ্রুতি। তারপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আস। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সুতাহাটা ব্লকের বিডিও আসিফ আনসারী সুতাহাটা থানার ও সি বিনয় কুমার মান্না সুতাহাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আঞ্জুমা বিবি সুতাহাটা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তুষার কান্তি মাইতি শিক্ষক অভিষেক দাস সহ অনেকেই। এই ঘটনা প্রচারিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলে নিন্দার ঝড় ওঠে। তাদের মতে, শিক্ষকের স্নেহসুলভ মনোভাব থাকা উচিত। তার বদলে ওড়না বা হিজাব নিয়ে তিনি যা করেছেন তা সত্যিই বাংলার জন্য অপমান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct