কখনও বাংলা ভাষাকে অবহেলা করে, ইংরাজি ভাষাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয়। তাহলে আমরা ,আমাদের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করব। আমরা ভুলতে বসেছি আমাদের নিজেদের একটা ভাষা আছে, আজও অনেকেই ইংরেজি স্কুলে পড়া বাচ্চাদের বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। অথচ স্বাধীনতার আগে আমরা ইংরেজদের স্কুলকে বয়কট করেছিলাম। বাংলা ভাষা নিয়ে নিয়ে লিখেছেন নিপু বিশ্বাস গোলদার।
আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছিল, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট। অনেক লড়াই ,অনেক রক্ত ক্ষয় ,অনেক জীবন বিসর্জন দিয়ে,তবেই স্বাধীন হয়েছিল ভারত বর্ষ। ভারত স্বাধীন করার উদ্দেশ্য ছিল, ইংরেজদের এ দেশ থেকে তাড়ানো। কারণ ভারতবাসী ভেবেছিল, দেশ আমাদের তবে কেন আমরা পরাধীন ভাবে অন্যের হাতের পুতুল হয়ে বাজবো? তাই সকলে মিলে আমাদের দেশকে স্বাধীন করেছিল, বিশেষ বিশেষ ব্যক্তি, যাদের নাম কোনদিনই, কেউ কখনো, মুছে ফেলতে পারবে না। আমি এ কথাগুলো বললাম তার কারণ হলো -আমাদের দেশ স্বাধীন হলেও, আজও আমরা পরাধীন হয়ে আছি, বিদেশি আদব কায়দায়। এখনো আমরা যেন ইংরেজদের, সবকিছু নকল করতে পারলে নিজেকে বড় মনে করি। আজ যদি কেউ শুদ্ধ বাংলা ভাষায় কথা বলে, সে দিকে আমরা কোন গুরুত্ব দিই না। অথচ একজন ইংরেজি ভাষা বলা ব্যক্তি কে প্রাধান্য দিয়ে থাকি। আমাদের ইংরেজিতে কথা বলা দোষের নয়, কিংবা অপরাধ নয়, ইংরেজি ভাষা আমাদের শেখা অবশ্যই দরকার। তা না হলে আমরা পিছিয়ে পড়বো। বাইরে সব জায়গায় ইংরেজি ভাষা প্রাধান্য পেয়ে থাকে। তাই ইংরেজি শেখা অবশ্য আমাদের দরকার ,তবে সেটা আমাদের প্রয়োজনের জন্য। মনে রাখতে হবে কখনও বাংলা ভাষাকে অবহেলা করে, ইংরাজি ভাষাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয়। তাহলে আমরা ,আমাদের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করব। আমরা ভুলতে বসেছি আমাদের নিজেদের একটা ভাষা আছে, আজও অনেকেই ইংরেজি স্কুলে পড়া বাচ্চাদের বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। অথচ স্বাধীনতার আগে আমরা ইংরেজদের স্কুলকে বয়কট করেছিলাম। কিন্তু স্বাধীনতার পর,আমরা ইংরেজি স্কুলকেই প্রাধান্য দিচ্ছি।
আমি শুধু এটুকুই বলতে চাইছি, আমাদের দেশের দেশাত্মবোধ ভুললে চলবেনা , আমরা বাংলাভাষাকে আগে প্রাধান্য দেব। তারপর ইংরেজি ভাষাকে প্রাধান্য দেব ।ইংরেজি ভাষাকে অবহেলা করতে বলছি না।কারণ আজ আমাদের দেশের সমস্ত অফিশিয়াল ব্যাপারে ইংরেজিতে লিখতে হয় ,কোন জায়গায় বাংলা লেখার প্রচলন নেই ।এই ক্ষেত্রে একটা কথা বলা ভালো যে ,আমাদের দেশে এই আইন চালু হওয়া উচিত- যে বাংলা ভাষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমরা ইংরেজি ভাষায় যেমন কেউ কথা বললে, অবাক হয়ে শুনি, তেমনি যেন ,কোন শুদ্ধ বাংলা ভাষা বলা ব্যক্তির কথাগুলি অবাক হয়ে শুনি। তাহলে আমরা অন্তত আমরা নিজেই নিজেদের সম্মান করতে পারব। আমরা সকলে বাঙালি আদব-কায়দা ভুলতে বসেছি । আজ প্রায় বেশিরভাগ মানুষই বাংলা তারিখ, জানেনা, জানে না বাংলা সাল। এইভাবে এক একটা করে সব ভুলতে বসেছি।অন্য সমস্ত দেশ তাদের আদব-কায়দা ধরে রেখেছে ।অথচ আমরা আমাদের আদব-কায়দা ধরে রাখতে পারছিনা ।একসময় দেখা যাবে এই ভাবে ভুলতে ভুলতে নিজেদের নিজ সত্তা হারিয়ে ফেলেছি, অন্যের নকল করে বেঁচে আছি।এই নকল করতে গিয়ে , আবারও আমরা নিজেদের কাছে পরাধীন হয়ে যাবো। তাই এসো, আমরা সকলে মিলে শপথ করি, নিজেদের নিজস্বতা বিসর্জন দেবো না, নিজেদের সমস্ত আদব-কায়দা ধরে রাখবো।তারপর আমরা আমাদের জীবনের, প্রয়োজনীয় পাশ্চাত্য আদব-কায়দা কে গুরুত্ব দেব ।নিজেদের সমস্ত কিছুকে ভুলে যাওয়া মানে নিজেকে অসম্মানিত করা। সবশেষে একটা কথা বলে শেষ করতে চাই ,সেই কথাটা হলো- আমরা ইংরেজিতে কথা না বলতে পারলে ,তাকে অশিক্ষিত মনে করি।অথচ শুদ্ধ বাংলা ভাষা না জানা ব্যক্তিকে কখনোই অশিক্ষিত মনে করিনা। অথচ দেখতে গেলে, একজন শুদ্ধ বাংলা ভাষা বলা ব্যক্তি , অল্প হলেও ইংরেজি শব্দ জানে। অথচ একজন ইংরেজি ভাষা বলা ব্যক্তি, শুদ্ধ বাংলা ভাষা জানে না বললেই চলে। সেক্ষেত্রে আমরা কাকে শিক্ষিত বলবো ?এই প্রশ্নটা না হয় আপনাদের কাছেই করলাম । এই প্রশ্নের উত্তর না হই আপনারাই দেবেন। “এটা আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ রইল”।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct