বিশেষ প্রতিবেদক,কালিয়াচক,আপনজন: ভাঙন দুর্গতরো আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রায় ২ বছর ধরে বন্ধ থাকা স্কুলে। অবশেষে দীর্ঘদিন পর স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু এখনও কালিয়াচক-৩ ব্লকের চামাগ্রাম স্কুল এখনও খোলা সম্ভব হয় নি। স্কুল দখল করে রয়েছেন ভাঙন দুর্গতরা। এদিকে স্কুলে আসার জন্য পড়ুয়ারা মরিয়া হয়ে উঠেছে। স্কুল খোলার দাবিতে বৃহস্পতিবার জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় পড়ুয়ারা। ঘটনাস্থলে আসেন থানার আইসি। সেসময় ওই রাস্তা দিয়ে ফরাক্কার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি গাড়ি থেকে নেমে বিক্ষোভকারী ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। আগামী ৭ দিনের মধ্যে পড়ুয়াদের দাবি পূরণ হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। মন্ত্রীর আশ্বাসে পরে অবরোধ উঠে যায়।
উল্লেখ্য, গোটা বীরনগর-১ গ্রাম পঞ্চায়েত জুড়ে তীব্র ভাঙনে বেশ কয়েকটি গ্রাম গঙ্গার গ্রাসে চলে যায়। কয়েকশো মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন সরকারি স্কুলে, কেউবা খোলা আকাশের নীচে, কেউ কেউ অন্যত্র রয়েছেন। ভাঙন দুর্গতদের মধ্যে প্রায় ১০০ পরিবার চামাগ্রাম হাই স্কুলে আশ্রয় নিয়ে রয়েছেন। মাস ছয়েক ধরে তাঁরা সেখানেই রয়েছেন। অন্যদিকে, ভাঙন দুর্গতদের দাবি দ্রুত তাদের থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। এর মধ্যে পাড়ায় শিক্ষালয় শুরু হলে স্কুলের শিক্ষকরা সেই নির্দেশিকা মতো ক্লাস করছিলেন। কিন্তু গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে স্কুল খুলেছে। স্বাভাবিকভাবে পাড়ায় শিক্ষালয়ও বন্ধ রাখতে হয়েছে। কিন্তু স্কুল খোলাও সম্ভব হয় নি। দুর্গতদের অন্যত্র পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে তারপর স্কুল খোলা যেতে পারে। তাও সময় সাপেক্ষা ব্যাপার। ইতিমধ্যে ব্লক প্রশাসন থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে শিমুলতলা মাদ্রাসায় পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু পড়ুয়ারা নিজেদের স্কুল ছেড়ে অন্যত্র যেতে নারাজ। শিক্ষকরা যদিও শিমূলতলা হাই মাদ্রাসায় গেলেও পড়ুয়ারা সেখানে কেউ যায় নি। পড়ুয়াদের অনেকেই চামাগ্রাম স্কুলেই এসে পৌঁছয়। তারা ওই স্কুল ছাড়া কোথাও যাবে না। অন্যদিকে বাকি পড়ুয়ারা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের নতুন ১৮ মাইলের কাছে রাস্তা অবরোধ করে স্কুল খোলার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে আসে বৈষ্ণবনগর থানার থানার পুলিশ। ওই রাস্তা ধরে যাচ্ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি ওই সময় গাড়ি দাঁড় করিয়ে অবরোধকারী ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদেরকে সমস্যার কথা শুনে এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ অবরোধ উঠে যায়।
মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘পড়ুয়াদের ন্যায্য দাবি। রাজ্য সরকার চেষ্টা করছে দুর্গতদের পুনর্বাসন দেওয়ার। কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। আমি ৭ দিন সময় চেয়েছি। তার মধ্যে একটা ব্যবস্থা আশা করি হয়ে যাবে।’ এই বিষয়ে মালদার জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, ‘পড়ুয়াদের শিক্ষার জন্যই আপাতত এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct