আপনজন ডেস্ক: কর্নাটক হাইকোর্ট মুসলিম মহিলাদের ধর্মীয় পোশাক, হিজাবকে রাজনৈতিক অভিসন্ধিপূর্ণ গেরুয়া শালের সমান গণ্য করেছে এবং হাইকোর্টে এই বিষয়ে স্পষ্ট সমাধানে না আসা পর্যন্ত শিক্ষাঙ্গনে হিজাব পরিধান করে প্রবেশের উপর নিষেধজ্ঞা জারি করেছে। এ প্রসঙ্গে ছাত্র সংগঠন এসআইও-র রাজ্য শাখার জনসংযোগ সম্পাদক সেখ ইমরান হোসেন এক প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তারা মনে করে কর্নাটক হাইকোর্ট এই মামলার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। একজন বিশ্বাসী ব্যক্তির জন্য ধর্ম পালন করা কোন ঐচ্ছিক বিষয় নয়। হিজাব মুসলিম মহিলাদের জন্য একটি অবশ্য পালনীয় কর্তব্যের অন্তর্ভুক্ত। তাই কোর্টের নির্দেশ মুসলিম মহিলাদের ধর্মীয় অধিকার পালনে হস্তক্ষেপ করেছে এবং তাদেরকে বৈষম্যহীন শিক্ষার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে।
এসআইওর সর্বভারতীয় সভাপতি মোহাম্মদ সালমান আহমাদ এই বিষয়ে বলেন, “একটি সরকারি স্কুলে সম্পূর্ণ ভুলভাবে যুক্তি উত্থাপন করা হয়েছে যে, শিক্ষার্থীদের হিজাব ও শিক্ষার মধ্যে কোন একটি বেছে নিতে হবে। এই যুক্তির প্রেক্ষিতে বলা যায় মা ও বাবার মধ্যে কোন একজনকে এবং জল ও অক্সিজেনের মধ্যে কোন একটিকে বেছে নিতে বলা হচ্ছে, যা সম্ভব নয়।” তিনি আরও বলেন, “একটি ক্লাসরুম দেশের অখন্ড চিত্র বহন করে যেখানে বিভিন্ন ধর্মের পড়ুয়াদের বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য থাকবে। এই বিভিন্নতা স্বীকার করেই শিক্ষার অধিকার সকল স্তরে পৌঁছে দিতে হবে।” সংগঠন মনে করে, শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আমাদেরকে বৈষম্য ছাড়াই সকল শিক্ষার্থীর বিশ্বাস ও অনুশীলনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে, বিশেষ করে যখন তা কোনোভাবেই অন্য শিক্ষার্থীদের অধিকারে হস্তক্ষেপ করে না। সালমান আহমাদ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈষম্য করার নিন্দা জানিয়ে বলেন, “কিছু ক্যাম্পাসে হিজাব পরতে চাওয়া মহিলা ছাত্রীদের শ্রেণীকক্ষ থেকে বঞ্চিত করে অন্য কোন স্থানে বসার ব্যবস্থা করা এক নির্লজ্জ পদক্ষেপ।” তিনি হিজাবের পক্ষে সরব হওয়া সকলকে উদ্দেশ্য করে জানান, “হিজাব বিতর্ককে সামনে রেখে হিন্দুত্ববাদী চক্রান্ত সমাজ ও শিক্ষাঙ্গনে পড়ুয়াদের মধ্যে বিভাজনের প্রয়াস চালাচ্ছে। তাই কোনরূপ প্ররোচনায় পা দেওয়া যাবে না।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, হিজাব মামলায় দেশের বিচার বিভাগ সংবিধানকে সমুন্নত রাখবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct