আপনজন ডেস্ক: টিকাকরণ ও কোভিড সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল কানাডা। বিক্ষোভকারীরা অন্টারিওর পার্লামেন্ট হিলের সামনে চলে এসেছে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও তার পরিবারকে গোপন আস্তানায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এমনিতেই ট্রুডোর এক সন্তান করোনায় আক্রান্ত। তাই বিগত কয়েকদিন ধরে গোটা পরিবার নিভৃতবাসেই রয়েছে। কিন্তু, আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়তে থাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে অন্যত্র সরানো হলো বলে খবরে প্রকাশ। জানা গেছে, আন্দোলকারীদের মধ্যে সিংহভাগই ট্রাকচালক। সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করতে একটানা হর্ন বাজাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে খালি পায়ে প্রতিবাদ দেখিয়েছেন তারা। সাধারণ কানাডাবাসীর একটি অংশও তাদের সমর্থনে পথে নেমেছেন। প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে শিশু, বৃদ্ধসহ বিশেষভাবে সক্ষমরাও। বিক্ষোভকারীদের দাবি, করোনার সংক্রান্ত একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। পাশাপাশি, বাধ্যতামূলক টিকাকরণের নীতিও গ্রহণ করেছে সরকার।
এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।আন্দোলনকারীদের নেতৃত্ব শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ হবে বলে জানিয়েছে। যদিও বিক্ষোভ হিংসাত্মক হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই যেকোনোরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সতর্ক রয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। টিকা, কোভিড বিধিসহ একাধিক ইস্যুতে সরাসরি ট্রুডোর বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। তাদের হাতে ‘মেক কানাডা গ্রেট এগেইন’, ‘উই আর হিয়ার ফর আওয়ার ফ্রিডম’, ‘ফাইট ফর ফ্রিডম’ লেখা প্ল্যাকার্ড। আন্দোলনের তাল কেটেছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি ভিডিও। তাতে দেখা যাচ্ছে, ওয়্যার মেমরিয়াল ও সেনাদের সমাধির উপর কয়েকজন নাচছেন। বিষয়টি সামনে আসতেই নিন্দার ঝড় উঠেছে। সরব হয়েছেন কানাডার সেনাকর্মকর্তা জেনারেল ওয়েন আইরে। টুইটারে তিনি লিখেছেন, আন্দোলনকারীরা ন্যাশনাল ওয়ার মেমরিয়ালে নাচ করছেন। এটা দেখে আমার খুব অস্বস্তি হচ্ছে। যারা এই ঘটনার সাথে যুক্ত, লজ্জায় তাদের মাথা নত হয়ে যাওয়া উচিত। কানাডার প্রতিরক্ষামন্ত্রী অনিতা আনন্দ লিখেছেন, এ ধরনের আচরণ নিন্দনীয়। সেনার সমাধি এবং ওয়ার মেমোরিয়াল অত্যন্ত পবিত্র জায়গা। দেশবাসীর কাছে আমার আর্জি, দেশের জন্য যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন, তাদের যথাযথ সম্মান দেয়া হোক। প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রায় ১০ হাজার আন্দোলনকারী পার্লামেন্ট হিলের কাছে একত্রিত হয়েছেন। যদিও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি সংখ্যাটা আরো বেশি। আন্দোলন তীব্রতর হলেও বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাইছেন না ট্রুডো। শুক্রবার তিনি বলেছিলেন, একটি ছোট অংশের মানুষ বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। তারা সমগ্র কানাডাবাসীর প্রতিনিধি নন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct