আপনজন ডেস্ক: ক'দিন আগে বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও সংগীত শিল্পী নিক জোনাস দম্পতি সম্প্রতি কন্যা সন্তানের মা-বাবা হয়েছেন। তারা সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান লাভ করেছেন। বলিউডের অনেকেই এই পদ্ধতিতে সন্তানের বাবা-মা হয়েছেন। শাহরুখ খান তার ছোট ছেলের জন্ম দিয়েছেন এভাবেই। জোহারসহ একতা কাপুরও সারোগেসির মাধ্যমেই সন্তানের বাবা-মা হয়েছেন। সম্প্রতি নিক-প্রিয়াঙ্কা দম্পতির সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান লাভের পর নেটদুনিয়ায় এ বিষয়ে জানার আগ্রহ ও কৌতূহল বেড়েছে। এবার জেনে নেওয়া যাক, সারোগেসি আদৌ কি?
সারোগেসি আসলে একটি সহায়ক প্রজনন-ভিত্তিক পদ্ধতি। যেখানে কাঙ্খিত বাবা-মা অন্য নারীর গর্ভ ভাড়া করেন। ওই গর্ভধারিণী মাকে বলা হয় সারোগেট। ওই নারীরাও অর্থের বিনিময়ে অন্যের শিশু গর্ভে ধারণ করেন। সারোগেসির অর্থ হলো অন্যের সন্তানকে নিজের গর্ভে ধারণ করা। গর্ভকালীন সময়ে ওই দম্পতি সারোগেট মায়ের গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্যের সম্পূর্ণ যত্ন নেয় ও সব ধরনের খরচের দায়িত্ব নেয়। যে সব দম্পতি সহজে গর্ভধারণ করতে পারেন না কিংবা কেউ যদি সিঙ্গেল প্যারেন্টস হতে চান, তারাই সারোগেসি পদ্ধতি বেছে নেন সন্তানলাভে। ইনফার্টিলি, স্বাস্থ্য জনিত সমস্যা, সমলিঙ্গের অভিভাবক ও অন্যান্য সমস্যার কারণেই মূলত অন্যের গর্ভ ভাড়া নিয়ে সন্তান লাভ করা হয় এ পদ্ধতি।
সারোগেসির পদ্ধতি কী?
সন্তান ধারণের জন্য নারী ও পুরুষের মধ্যে যৌনসম্পর্ক থাকা প্রয়োজন। তবে যেসব নারীর সন্তান হয় না কিংবা একক বাবা-মা বা সমলিঙ্গের অভিভাবক যারা সন্তান জন্ম দিতে পারেন না তারাই সারোগেট মাকে ভাড়া করেন। সারোগেসির জন্য শুধু সারোগেট মাকে প্রয়োজন। প্রথমে শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত করা হয়। এরপর যে দম্পতি সন্তানের মা-বাবা হতে চাচ্ছেন, ওই পুরুষের শুক্রাণু নিয়ে আইভিএফ কৌশলের মাধ্যমে সারোগেট নারীর গর্ভে প্রতিস্থাপন করা হয়। আইভিএফ প্রযুক্তি সারোগেসির অন্যতম এক মাধ্যম। আইভিএফ হলো ‘ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন’। নিষিক্তকরণের অর্থ হলো পুরুষের শুক্রাণু ও নারী ডিম্বাণুর মিলন। যেখান থেকে ভ্রূণ তৈরি হয়। ইন ভিট্রো অর্থ কাচের ভেতরে। এক্ষেত্রে বলা হয় টেস্টটিউব পদ্ধতি। এ কারণেই কৌশলটি টেস্টটিউব বেবি নামেও পরিচিত। এ পদ্ধতির মাধ্যমে নারীর শরীরের ভেতরে যে প্রক্রিয়াটি ঘটে, সেটিই টেস্টটিউবের মাধ্যমে ল্যাবে করা হয়। পুরুষের শুক্রাণু গ্রহণের পর নারীর শরীর থেকে ডিম্বাণু বের করে একটি সূচের মাধ্যমে শুক্রাণুতে প্রবেশ করানো হয়। এরপর কাচের ভেতর ভ্রূণ প্রস্তুত করা হয়। এরপর একটি মেডিকেল টিউবের মাধ্যমে সারোগেট নারীর জরায়ুতে প্রবেশ করানো হয়। এই পুরো ব্যবস্থাটিই হলো সারোগেসি পদ্ধতি। এভাবেই নিঃসন্তান দম্পতি অন্যের গর্ভ ভাড়া নিয়ে সন্তানের জন্ম দেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct