সেক আনোয়ার হোসেন,কাঁথি,আপনজন: একুশের নির্বাচনে শিশির অধিকারীকে দেখা গিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মঞ্চে।তারপর তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ থাকলেও দলের কাজে সক্রিয় ছিলেন না। এই অভিযোগ তুলে লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাবা শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা। সংসদ সূত্রে খবর,শিশির অধিকারীর বিষয়টি পাঠানো হয়েছে প্রিভিলেজ কমিটির কাছে। প্রিভিলেজ কমিটি পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট পেশ করবে স্পিকারের দফতরে। তারপরই শিশির অধিকারীর সাংসদ পদ খারিজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এখন প্রশ্ন উঠছে, যদি সব তথ্য মিলে যায় তাহলে তা খারিজ হতে পারে পদ,ফলে শিশির অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেস–বিজেপি কারও সাংসদই থাকবেন না। শিশিরের অধিকার কার? তৃণমূল, না বিজেপির- বিতর্কটা বাড়ছিল বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই। খাতায় কলমে তৃণমূলের সাংসদ শিশির অধিকারী। বছর খানেকের বেশি সময় ধরে নিষ্ক্রিয়। দেখা যায় না দলের কোনও কর্মসূচিতে। উল্টে ভোটের আগে বিজেপির কর্মসূচিতে ছেলের বউকে সঙ্গে নিয়ে মঞ্চে দেখা গিয়েছেন। কাঁথির এই তৃণমূল সাংসদের এহেন অবস্থানের পরই তাঁর সাংসদ পদ খারিজের দাবি তোলে তৃণমূল। বঙ্গে বিধানসভা ভোটের পর দু-দফায় লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লার কাছে চিঠি দিয়েছিলেন দলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করেও এই দাবি জানিয়েছিলেন। শিশিরের পাশাপাশি সেসময় সুনীল মণ্ডলের সাংসদ পদ খারিজেরও দাবি তুলেছিল তৃণমূল। প্রায় ৮-৯ মাস চুপ থাকার পর ফের শিশির অধিকারীর সাংসদ পদ খারিজের দাবি জোরাল করল ঘাসফুল শিবির।তৃণমূলের এই দাবির পর বিষয়টি নিয়ে পুঙ্খানু পুঙ্খ রিপোর্ট এবং তদন্তের নির্দেশ।
তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদানের পরই তৃণমূল-অধিকারী পরিবারের সম্পর্কের সমীকরণ পাল্টে যায়। শুভেন্দু প্রকাশ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ হানতে শুরু করেন। শিশিরও মুখ খোলেন মমতা এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দূরত্ব যখন বাড়তে শুরু করে, তখন তৃণমূলের একাধিক শীর্ষ নেতা প্রকাশ্যে মুখ খোলেন শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে শনিবার ফের একবার শিশিরের সাংসদ পদ খারিজের দাবি তুলল তৃণমূল। পাশাপাশি বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডলের সাংসদ পদ খারিজের দাবি তুলেছিল তৃণমূল। কিন্তু ৬-৭ মাস আগে আচমকা বিজেপি থেকে তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন করেন মুকুল রায়। তার পরই মুকুলের বাসভবনে যেতে দেখা যায় সুনীলকে। সুনীল পর্বে আরও পরিবর্তন আসে। কিছুদিন আগে পর্যন্ত যে সুনীল মণ্ডল তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেন, তিনি তৃণমূলের পক্ষে বলতে শুরু করেন। শনিবার এই পট পরিবর্তনের আরেক ধাপ দেখা গেল। শিশির অধিকারীর সাংসদ পদ খারিজের কথা বলা হলেও সুনীলকে নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি দল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct