সেক আনোয়ার,তমলুক,আপনজন: লক্ষ লক্ষ টাকার ঋণে ডুবে শেষমেষ কোনো রাস্তা খুঁজে না পেয়ে জেলা শাসকের কাছে এসে মৃত্যুবরণের আবেদন জানাল নয়াচরের মৎস্যজীবীরা। সরকার যদি এই যাত্রায় তাদের সাহায্য না করে তবে মৃত্যু ছাড়া কোনো গতি নেই তাদের। এমনটাই জানালেন তাঁরা।শুক্রবার এই আবেদন নিয়ে তাঁরা গিয়ে পৌঁছান জেলাশাসক দপ্তরে। তাঁরা জানান,বিগত কয়েক বছর ইয়াস ও আম্ফানের মতন ঝড় গুলিতে তাদের মাছ চাষে বহু ক্ষতি হয়েছে। বহু টাকার দেনায় পড়ে রয়েছেন তাঁরা। কাজেই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ভেড়ি গুলি যদি প্রশাসনের তৎপরতায় মেরামত না করা হয় তবে কোনভাবেই মাছ চাষ করা সম্ভব নয়। এদিন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক ব্লকের নয়াচর দ্বীপের মৎস্যচাষী জানান, তাঁরা ২০০৭ সাল থেকে নয়াচরে মাছ চাষের ব্যবসা করে আসছেন। কিন্তু দু-তিন বছর ধরে পরপর ভয়ঙ্কর ইয়াস এবং আম্ফান ঝড়ের ফলে তাদের ভেড়ি গুলি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও লাখ লাখ টাকা মহাজনের কাছ থেকে ধার করে তাঁরা মত্স্য চাষ করেছিলেন। সেগুলি সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে ওই ঝড়ের জন্যই।এখন কোনো ভাবেই সেই ঋণ শোধ করা সম্ভব নয় যদি না,সরকারের পক্ষ থেকে ভেড়ি গুলির মেরামতির দায়িত্ব নেওয়া হয়।ভেড়ি গুলি যদি মেরামত করা হয় তবেই তাঁরা পুনরায় সরকারি সাহায্য পেয়ে মাছ চাষ করতে পারবেন এবং তা দিয়ে হয়ত দু-তিন বছর ধরে মহাজন ঋণ শোধ করতে সক্ষম হবেন।জানা যায়,তাঁরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে ওই ভেড়িগুলি ঠিক করার কাজে নেমেছিলেন। কিন্তু প্রথমত ওই ভেড়ি গুলিকে যন্ত্র দ্বারা মেরামত করতে হবে এবং দ্বিতীয়ত তা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। সারাই কাজ না হওয়ায় তাদের ক্ষতির পরিমাণ দিন দিন আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিক থেকে মহাজনদের চাপে তাদের প্রাণ প্রায় ওষ্ঠাগত। তাই সরকারি সাহায্য না পেলে তাঁরা স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করবেন। এই দাবি জানানো হয় জেলাশাসক দপ্তরে। এই পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূল তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবপ্রসাদ মন্ডল বলেন, ‘নয়াচর দ্বীপের বর্তমানে যে পরিস্থিতি তাঁর জন্য দলের কিছু নেতা এবং জনপ্রতিনিধিরা দায়ী’। যদিও মৎস্যজীবীদের এই দুর্দিনে তাঁরা সরকারি সাহায্য কতটা পাবেন তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct