আপনজন ডেস্ক: পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোতে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের কাছে সেনাদের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়েছে। রাজধানী ওগাদুগোউ’তে সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটে। বিদ্রোহী সৈন্যদের হাতে আটক হয়েছেন বুরকিনা ফাসোর প্রেসিডেন্ট রোচ মার্ক ক্রিশ্চিয়ান কাবোর। দেশটির একাধিক সেনাশিবিরে প্রচণ্ড গোলাগুলির পর রবিবার একটি সেনা শিবিরে বিদ্রোহী সেনারা তাকে আটক করে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, ক্ষুব্ধ প্রতিবাদকারীরা রবিবার রাস্তায় বের হয়ে এসে বিদ্রোহীদের প্রতি সমর্থন জানায় ও প্রেসিডেন্ট কাবোরের রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে তছনছ করে। পরে বুরকিনা ফাসোর সরকার রবিবার রাত ৮টা থেকে পরবর্তী দু’দিনের জন্য দেশজুড়ে কারফিউ জারি করেছে। একইসঙ্গে দেশটির সব স্কুলও দুদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
রবিববার বেশ কয়েকটি সামরিক ক্যাম্প থেকে কয়েক ঘণ্টা ধরে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।
সোমবার সকালেও প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের কাছে রাষ্ট্রপতি বহরের বেশ কয়েকটি সাঁজোয়া যানে গুলির অনেকগুলো চিহ্ন দেখা গেছে। যদিও গোলাগুলির এসব ঘটনার পর সামরিক অভ্যুত্থান ঘটতে চলেছে বলে যে গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল, তা অস্বীকার করে দেশটির সরকার। সম্প্রতি পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটিতে জঙ্গিরা কিছুদিন পরপরই বেসামরিক ও সেনাদের হত্যা করছিল। এতে দেশজুড়ে হতাশা ছড়িয়ে পড়ে।
এসব জঙ্গিদের কোনো কোনো অংশের সঙ্গে ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও আল কায়েদার সম্পর্ক আছে।
সরকার সামরিক অভ্যুত্থানের অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমনই খবর রটে গেছে। এমন খবরে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট রোচ মার্ক ক্রিশ্চিয়ান কাবোরে’কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার এ খবর নাকচ করে দিয়ে জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে ভাষণ দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বার্থেলেমি সিম্পোরে। প্রেসিডেন্ট কোথায় সে সম্পর্কে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় তিনি কেন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন- তা নিয়ে জনমনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সামরিক অভ্যুত্থানের গুজব আরো ডালপালা ছড়িয়েছে।রোববার স্থানীয় সময় ভোর ৫টায় কয়েকটি সেনা ক্যাম্পে ভারি গুলি বিনিময় হয়। এরপর দিনশেষে প্রেসিডেন্ট রোচ মার্ক ক্রিশ্চিয়ান কাবোরে’র বাসভবনের খুব কাছে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়। এর কয়েক ঘন্টা আগে বিদ্রোহী সেনারা রাজধানী ওগাদুগোউ’র একটি সামরিক ঘাঁটি তাদের দখলে নেয়। তাদের দাবি সেনাবাহিনীর বর্তমান প্রধানদেরকে বরখাস্ত করতে হবে। কারণ, প্রেসিডেন্ট তার পছন্দের লোকদের সেনাবাহিনীর শীর্ষ পদগুলোতে বসিয়ে দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি নিজের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করেছেন।
একই সঙ্গে ইসলামপন্থি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য বিদ্রোহী সেনারা আরো সম্পদ দাবি করেছে। সেনাদের সমর্থনে রাজপথে বেরিয়ে এসেছে কয়েক হাজার মানুষ। ফলে বাধ্য হয়ে দেশটির কর্তৃপক্ষ নৈশকালীন কারফিউ ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন: