আপনজন ডেস্ক: বেইজিংয়ে শীতকালীন অলিম্পিক বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কে অবস্থানরত উইঘুর মুসলিমরা। চীনের সংখ্যালঘু এই সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যেভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে, তার প্রতিবাদে ইস্তাম্বুলে রোববার টার্কিস অলিম্পিক কমিটি ভবনের বাইরে বিক্ষোভ করেন তারা। বিক্ষোভকারীরা পূর্ব তুর্কিস্তান স্বাধীনতা আন্দোলনের নীল-সাদা পতাকা দোলাতে দোলাতে নানা রকম স্লোগান দেন। এই গ্রুপটিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় সিনজিয়াং প্রদেশের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি বলে মনে করে বেইজিং। বিক্ষোভ থেকে স্লোগান দেয়া হয়- ‘চায়না, গণহত্যা বন্ধ করো; চায়না, বন্দিশিবির বন্ধ কর’। বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে এ সময় ‘গণহত্যাকারীদের অলিম্বিক বন্ধ কর’ স্লোগান লেখা ব্যানারও দেখা যায়। বিক্ষোভে অংশ নেন উইঘুর সম্প্রদায়ের একজন গৃহবধু মুনিভার ওজুগুর। তার আত্মীয়রা বন্দি আছেন চীনের বন্দিশিবিরে। বলেছেন, উইঘুরদের বিরুদ্ধে নির্যাতন, নিষ্ঠুতা এবং গণহত্যা চালাচ্ছে চীন। তাই তাদের অলিম্পিক আয়োজনের কোনো অধিকার থাকতে পারে না। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ ও অধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলোর হিসাবে কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষকে সিনজিয়াংয়ের বিভিন্ন বন্দিশিবিরে আটক করে রেখেছে চীন। এসব বন্দির বেশির ভাগই উইঘুর এবং সংখ্যালঘু মুসলিমদের অন্য সম্প্রদায়ের। তবে গণহত্যা বা বন্দিশিবিরে বন্দিদের দিয়ে জোরপূর্বক শ্রমে বাধ্য করার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে বেইজিং। তাদের ভাষ্য, এসব বন্দি নয়। উগ্রপন্থা থেকে ফিরিয়ে আনতে এসব শিবির হল সংশোধনাগার।
কিন্তু আন্তর্জাতিক বিশ্ব তা মোটেও বিশ্বাস করে না। কারণ, এসব নির্যাতন, নিষ্ঠুরতা নিয়ে অনেক প্রামাণ্য তথ্য আছে। প্রথমে এমন শিবিরের অস্তিত্ব থাকার কথা অস্বীকার করেছিল চীন। পরে তারা এগুলোকে সংশোধনাগার হিসেবে আখ্যা দেয়। আগামী ৪ঠা ফেব্রুয়ারি শীতকালীন অলিম্পিক শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু চীনের মানবাধিকার রেকর্ডের প্রতিবাদে এই গেমসে বৃটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ডেনমার্ক সহ যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ মিত্র ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের কূটনৈতিক প্রতিনিধি পাঠাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এরই মধ্যে উইঘুর ইস্যুতে চীনের বেশ কিছু রাজনীতিক ও কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। চীনও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ইউরোপিয়ান, বৃটিশ ও মার্কিন আইন প্রণেতাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে চীন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct